ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি কাকে বলে? ব্যাকরণিক শব্দ কয় প্রকার ও কী কী ?

ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি

ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি

 

আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা আলোচনা করবো ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি কাকে বলে? ব্যাকরণিক শব্দ কয় প্রকার ও কী কী ? তাহলে চলুন শুরু করা যাক..

ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি

ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি কাকে বলে?  অথবা ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি বলতে কি বোঝ?

উত্তর: স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ব্যাকরণগতভাবে বাংলা ভাষার শব্দসমূহকে বিভাজন করার প্রক্রিয়া বা তার ব্যবহারকে ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি বলে।

ব্যাকরণিক শব্দ ৮ প্রকার।

যথা:

১. বিশেষ্য।

২. সর্বনাম।

৩. বিশেষণ।

৪. ক্রিয়া।

৫. ক্রিয়া-বিশ্লেষণ:

৬. আবেগ শব্দ।

৭. যোজক শব্দ।

৮. অনুসর্গ।

 

নিম্নে এগুলোর বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হলো-

বিশেষ্য কাকে বলে?

উত্তর: যে শব্দশ্রেণি দ্বারা কোনো ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, কাল, জাতি, সমষ্টি, কর্ম, ভাব বা গুণের নাম বোঝায়, সেগুলোকে বিশেষা বলে।

যেমন- রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বই, খাতা, ঢাকা, নেত্রকোণা, সকাল, বাঙালি, সমিতি, ভোজন, আনন্দ, দুধ, তারুণ্য, মনন প্রভৃতি।।

আরও পড়ুন:

সমাস কাকে বলে? সমাস কত প্রকার?

বাক্য কাকে বলে? অর্থ অনুসারে বাক্য কয় প্রকার ও কী কী?

বর্ণ কি বা বর্ণ কাকে বলে? বর্ণ কত প্রকার ও কি কি?

সর্বনাম কাকে বলে?

উত্তর: যে শব্দশ্রেণি কোনো বিশেষ্যের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়, তাদেরকে সর্বনাম বলে।

যেমন: রাহিমা ভালো ছাত্রী। সে বরাবর ক্লাসে প্রথম হয়। তার মেধা খুব তীক্ষ্ণ। তাকে সবাই পছন্দ করে।

এখানে “সে”, “তার ডাকে এ শব্দগুলো ‘ রাহিমা’ বিশেষ্যটির বদলে বসেছে, তাই এগুলো সর্বনাম শব্দ। এ জাতীয় শব্দ বিশেষ্য, বিশেষ্যগুচ্ছ কিংবা বিশেষ্যস্থানীয় বাক্যাংশ বা বাক্যের বদলে বসে। সর্ব অর্থাৎ সবার নামের বদলে বসে বলেই এদের নাম সর্বনাম।

 

বিশেষণ কাকে বলে?

উত্তর: যে শব্দশ্রেণি কোনো বিশেষ্য বা সর্বনামকে বিশেষিত করে তাদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ, আকার বা বর্ণ বোঝায় তাদেরকে বিশেষণ বলে।

যেমন: সে ভাল ছাত্র। এরকম বোকা, চালাক, ভাজা, এক, অর্ধেক, বিশাল, লাল প্রভৃতি।

ক্রিয়া কাকে বলে?

উত্তর: যে শব্দশ্রেণি দ্বারা কোনো কিছু করা, হওয়া, ঘটা বা থাকা বোঝায় তাদেরকে ক্রিয়া বলে।

যেমন: আমরা পড়া শুনা করে বড় হতে চাই। এরকম পড়া, ফোটা, উঠা, হাসা, বাসকরা প্রভৃতি।

 

ক্রিয়া-বিশেষণ কাকে বলে?

উত্তর: যে-শব্দশ্রেণি বাক্যের কোনো ক্রিয়াকে বিশেষিত করে তাদের স্থান, কাল, ধরন, গতি, অবস্থান প্রভৃতি বোঝায় তাদেরকে ক্রিয়া-বিশেষণ বলে।

যেমন: তারা দ্রুত কথা বলে। এরকম এখানে, সকালে, নির্ভয়ে, দ্রুত, অবশ্যই প্রভৃতি।

 

আবেগ শব্দ কাকে বলে?

উত্তর: মূলত যে শব্দের সাহায্যে মনের নানা ভাব বা আবেগকে প্রকাশ করা হয়, তাকে আবেগ শব্দ বলা হয়। প্রথাগত ব্যাকরণে এগুলোকে অনন্বয়ী, মনোভাববাচক বা অন্তর্তাবাহত্মক অব্যয়ও বলা হয়। আবেগ শব্দ অন্য শব্দগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত না হয়ে স্বাধীনভাবে বসে।

যথা- বাহ! কী সুন্দর সকাল। ছিঃ ছিঃ। এ তুমি কী করলে।। এরকম আহা মরি মরি,কী মজা, হায় হায় ভৃতি।

যোজক শব্দ কাকে বলে?

উত্তর: একটি বাক্যের সঙ্গে অন্য একটি বাক্যের কিংবা বাক্যের অন্তর্গত একটি পদের সঙ্গে অন্য পদের সংযোজন, বা অথবা সংকোচন ঘটানোর কাজটি যে করে থাকে তাকে যোজক বলে। যেমন- তুমি আর আমি সারা জীবন এক সাথে পথ চলব। এরকম – এবং, কিন্তু, অথচ, অথবা, নতুবা, কারণ, যা-তা প্রভৃতি।

অনুসর্গ কাকে বলে?

উত্তর: যে সকল অব্যয় জাতীয় শব্দ বাক্যের কোনো পদে পরে বসে ঐ পদের সাথে (যে পদের পরে বসে) অন্যান্য পদের সম্পর্ক সৃষ্টি করে এবং বাক্যের অর্থ প্রকাশে সাহায্য করে তাদেরকে অনুসর্গ বলে।

যেমন- দুঃখের পরে আসে সুখ। এরকম সঙ্গে, সাথে, মাঝে, মধ্যে, আগে, উপরে, নিচে, পক্ষে, বিপক্ষে প্রভৃতি।

###

আজকের এই পোস্ট থেকে আমরা জানতে পারলাম ব্যাকরণিক শব্দশ্রেণি কাকে বলে? ব্যাকরণিক শব্দ কয় প্রকার ও কী কী ?পোস্টটি কেমন লাগলো আমাদের কমেন্ট করে জানান। ধন্যবাদ।

Back to top button