কম্পিউটার কাকে বলে? কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য, প্রকারভেদ ও ব্যবহার

কম্পিউটার কত প্রকার ও কী কী?

কম্পিউটার কাকে বলে? কম্পিউটার কত প্রকার ও কী কী?

কম্পিউটার কী?

কম্পিউটার অত্যাধুনিক একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্রের নাম। গ্রিক শব্দ কম্পিউট (Compute) থেকে Computer শব্দটি এসেছে। Computer শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো গণনাকারী যন্ত্র বা হিসাবকারী যন্ত্র। বর্তমান সময়ে কম্পিউটার দিয়ে অনেক কাজ করা হলেও শুরুতে কম্পিউটার দিয়ে শুধু হিসাব-নিকাশ করা হতো। তখন, কম্পিউটারের পরিচয় ছিলো গণনা যন্ত্রের। তবে, এখন আর কম্পিউটারকে গণনাকারী যন্ত্র বলা যাবেনা। কম্পিউটার এমন একটি যন্ত্র যা তথ্য গ্রহন করার পর বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রসেস করে তা উপস্থাপন করে।

আজকের এই পোস্টে আমরা জানবো-

  • কম্পিউটার কী বা কম্পিউটার কাকে বলে?
  • কম্পিউটার কত প্রকার ও কী কী?
  • কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য।
  • কম্পিউটারের ব্যবহার।
  • কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেন ?
  • কম্পিউটার কীভাবে কাজ করে?

 

কম্পিউটার কাকে বলে? (What is a Computer?)

কম্পিউটার একটি অত্যাধুনিক ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র, যা নিজস্ব স্মৃতিভাণ্ডারে একাধিক কাজের নিদের্শাবলি সংরক্ষণ করে রাখে। ব্যবহারকারী ডেটা বা উপাত্ত সরবরাহ করলে কম্পিউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রসেসিং করে কাজের ফলাফল প্রদান করে।
কম্পিউটারের ফলে মানুষের জীবন আরও সহজ ও গতিশীল হয়েছে। মানুষের মধ্যে ক্লান্তিহীনতা ও নিদ্রা আসলেও কম্পিউটারের কোন ক্লান্তিহীনতা ও নিদ্রা নেই।

আরও পড়ুন:

ইউনিকোড কি? ইউনিকোড প্রতিষ্টার কারন এবং সুবিধা সমূহ

ভিডিও কনফারেন্সিং কি? ভিডিও কনফারেন্সিং এর সুবিধা

কম্পিউটার কীভাবে কাজ করে? (How do computers work?)

কম্পিউটার এমন একটি যন্ত্র যা সেকেন্ডের মধ্যে কোটি কোটি হিসাব করতে পারে। কম্পিউটারে কাজ করার গতি ন্যানোসেকেন্ড (NS) এ হিসেব করা হয়। কম্পিউটারের ভিতর অনেক বর্তনী রয়েছে। ইলেকট্রন প্রবাহের মাধ্যমে কম্পিউটারের যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালিত হয়। কম্পিউটার নিজে কাজ করতে পারেনা। কম্পিউটারের কাজের জন্য কমান্ড দিতে হয়। কমান্ড দেওয়ার জন্য কম্পিউটারের বিশেষ ভাষা রয়েছে। কম্পিউটারের বোধগম্য এ ভাষার মাধ্যমে কম্পিউটারে যে নির্দেশ দেয়া হয় সেই নির্দেশ অনুয়ায়ী কম্পিউটার কাজ করে। কম্পিউটারের এ নির্দেশাবলিকে বলা হয় প্রোগ্রাম। কম্পিউটার প্রোগ্রাম ছাড়া একটি জড় পদার্থ। উপযুক্ত প্রোগ্রামের ফলে কম্পিউটার জড় পদার্থ থেকে গাণিতিক শক্তিসম্পন্ন বুদ্ধিমান যন্ত্রে পরিণত হতে পারে।

 

কম্পিউটারের কাজ (Functions of Computer)

কম্পিউটার ৪টি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো-

  1. কম্পিউটার ব্যবহারকারী কর্তৃক তৈরি প্রোগ্রাম (Programs) কম্পিউটার গ্রহণ করে মেমোরিতে সংরক্ষণ করে এবং  ব্যবহারকারীর নির্দেশ মোতাবেক প্রোগ্রাম নির্বাহ (Execute) করে।
  2. কম্পিউটার কী-বোর্ড, মাউস, ডিস্ক ইত্যাদির মাধ্যমে ডেটা (Data) গ্রহণ করে ।
  3. কম্পিউটার ডেটা (Data) গ্রহণ করার পর ডাটা প্রক্রিয়াকরণ (Process) করে।
  4. ডাটা প্রক্রিয়াকরণ (Process) সম্পন্ন হলে মনিটর, প্রিন্টার, প্লটার ইত্যাদির মাধ্যমে ফলাফল প্রদান করে।

আরও পড়ুন:

ইন্টারনেট কাকে বলে? ইন্টারনেট কত প্রকার? সুবিধা ও অসুবিধা

কৃত্রিম উপগ্রহ কি বা কাকে বলে? কৃত্রিম উপগ্রহের প্রকারভেদ ও ব্যবহার

কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Computer)

অন্যান্য যন্ত্রের মতো কম্পিউটারেরও নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নিম্নে সেগুলো উল্লেখ্য করা হলো-

১. দ্রুতগতি (High speed): কম্পিউটার অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে কাজ করতে পারে। এটি সেকেন্ডের মধ্যে কোটি কোটি হিসাব করতে পারে। কম্পিউটারের কাজের গতি মিলি সেকেন্ড, মাইক্রোসেকেন্ড, ন্যানোসেকেন্ড, পিকোসেকেন্ড ইত্যাদিতে ভাগ করা যায়।

২. নির্ভুলতা (Correctness): কম্পিউটার একটি যন্ত্র। এটি নিজে কাজ করতে পারেনা। ব্যবহারী যে নির্দেশ দেয় সে হিসাবে কম্পিউটার কাজ করে। কম্পিউটার নিজে কখনো ভুল করেনা তবে ব্যবহারকারী ভুল করলে ফলাফল ভুল দেখায়। কম্পিউটারের নির্ভুলতা শতকরা ১০০ ভাগ।

৩. সূক্ষ্মতা (Accuracy) : কম্পিউটারের স্মৃতিশক্তি অনেক বেশি। এটি যন্ত্র হলেও অনেক সূক্ষ্মভাবে কাজ করে।

৪. বিশ্বাসযোগ্যতা (Reliability): কম্পিউটার এমন একটি যন্ত্র যা নির্ভুল ও সূক্ষ্মভাবে কাজ করে। কম্পিউটারের কাজের কোন ভুল নাই। মানুষ বা কম্পিউটার ব্যবহারকারী ভুল করতে পারে কিন্তু কম্পিউটার ভুল করেনা। এটা প্রমাণিত।

৫. ক্লান্তিহীনতা (Dilligence): কম্পিউটার যেহেতু একটি যন্ত্র তাই এটির কোন ক্লান্তি নাই। ব্যবহারকারীর কমান্ড মোতাবেক সারাক্ষণ কাজ করে যায়। সারাক্ষণ কাজ করলেও উৎসাহ, মনোযোগ ইত্যাদির ঘাটতি হয়না।

আরও পড়ুন:

ইনফ্রারেড কি ? ইনফ্রারেড কত প্রকার? সুবিধা ও অসুবিধা

ডেটা ট্রান্সমিশন স্পীড কি? কত প্রকার ও কি কি?

৬. স্মৃতিশক্তি (Memory): কম্পিউটারের নিজস্ব স্মৃতিশক্তি (Memory) রয়েছে। সেখানে কম্পিউটার ব্যবহারকারীর তথ্য জমা রাখে, পক্রিয়া করে ফলাফল প্রদান করে।

৭. স্বয়ংক্রিয়তা (Automation): কম্পিউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবেও কাজ করতে পারে। সেজন্য মানুষের পরিবর্তে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

৮. যুক্তিসংগত সিদ্ধান্ত (Logical decision): কম্পিউটার তথ্য উপস্থাপন করে যুক্তিসংগত সিদ্ধান্ত প্রদান করে।

৯. বহুমুখিতা (Versatility): বহুমুখী কাজে কম্পিউটারকে ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে শিক্ষা থেকে শুরু করে সকল কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে।

১০. অসীম জীবনীশক্তি (Endless life): পোগ্রামের মাধ্যমে কম্পিউটার চালানো হয়। এর কোন মৃত্যু নেই। দীর্ঘদিন কাজ করার পরও কম্পিউটার পোগ্রামের কোন ক্ষতি হয়না।

 

বিভিন্ন ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার (Application of Computer in various fields)

বর্তমানে মানব জীবনের সাথে জড়িত প্রায় সকল কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। নিম্নে কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো-
১. অফিস-আদালতসহ বিভিন্ন জায়গায় লেখালেখির কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

২. বিভিন্ন ব্যাংক, শেয়ার বাজার ও ইন্স্যুরেন্স ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে টাকা পয়সার হিসাব করতে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

৪. শিল্প কারখানায় যন্ত্রপাতি পরিচালনা বা নিয়ন্ত্রণের কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

৫. যন্ত্রপাতি, জাহাজ, এ্যারোপ্লেন, মোটরগাড়ি, ঘরবাড়ি ইত্যাদি ডিজাইন করতে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

আরও পড়ুন:

গুগলে দ্রুত সঠিক তথ্য খুঁজে পাওয়ার কৌশল

ব্লুটুথ কি বা কাকে বলে? ব্লুটুথের বৈশিষ্ট্য, ব্যবহার, সুবিধা ও অসুবিধা

৬. শিক্ষাক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন ধরনের গবেষণামূলক কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

৭. এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সংবাদ প্রেরণের ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

৮. বিনোদনের ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

৯. মুদ্রণশিল্পে প্রকাশনামূলক কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

১০. যোগাযোগ ব্যবস্থার টিকিট কেনা বেচায় কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

১১. সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

১২. আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রদানে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

এছাড়া আরও অনেক কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

 

কম্পিউটারের প্রকারভেদ (Classification of Computer)

কম্পিউটার কত প্রকার ও কী কী?

গঠন এবং কাজের ভিত্তি করে কম্পিউটারকে তিনভাগে ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

  1. এনালগ কম্পিউটার (Analog computer).
  2. ডিজিটাল কম্পিউটার (Digital Computer).
  3. হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybrid Computer).

আরও পড়ুন:

ই-সিম কী? ই-সিমের সুবিধা ও অসুবিধা এবং ব্যবহারের নিয়ম

মোবাইল অফিশিয়াল না আন অফিশিয়াল বুঝবেন যেভাবে

এনালগ কম্পিউটার (Analog computer)

এনালগ কম্পিউটার কাকে বলে? (What is a Analog Computer?)

Analogy থেকে Analog শব্দটি এসেছে। যার অর্থ হলো হচ্ছে সাদৃশ্য। এনালগ সংকেতের মাধ্যমে অ্যানালগ কম্পিউটার (Analog Computer) কাজ করে।

এনালগ কম্পিউটারের বৈশিষ্ট

  • এনালগ সংকেত পর্যায়ক্রমে উঠানামা করে।
  • এনালগ কম্পিউটার আউটপুট সাধারণত কাঁটা বা প্লটারের মাধ্যমে প্রদান করে।
  • এক ধরনের কাজের জন্য তৈরিকৃত এনালগ কম্পিউটার অন্য ধরনের কাজের জন্য ব্যবহার করা যায় না। সেজন্য একেক ধরনের কাজের জন্য একেক ধরনের এনালগ কম্পিউটার তৈরি করা হয়। যেমন; চাপ মাপের জন্য তৈরি এনালগ
  • কম্পিউটার তাপ মাপের কাজে ব্যবহার করা যায় না।
  • এনালগ কম্পিউটারের কাজের সূক্ষ্মতা কম।

 

এনালগ কম্পিউটারের ব্যবহার

  • মোটর গাড়ির স্পিডোমিটার, পাইড রুল, অপারেশনাল অ্যামপ্লিফায়ার ইত্যাদি কাজে এনালগ কম্পিউটার (Analog Computer) ব্যবহার করা হয়।

আরও পড়ুন:

ওয়াইফাইয়ের স্পিড বাড়াবেন যেভাবে

হটস্পটের নাম বদলানোর সহজ উপায়

ডিজিটাল কম্পিউটার (Digital Computer)

ডিজিটাল কম্পিউটার কাকে বলে? (What is a Digital Computer?)

ডিজিট (Digit) শব্দ থেকে ডিজিটাল (Digital) শব্দের উৎপত্তি। সংখ্যা প্রক্রিয়াকরণের ভিত্তিতে ডিজিটাল (Digital Computer) কাজ করে। ডিজিটাল কম্পিউটার বাইনারী অর্থ্যাৎ ০ (শূন্য) এবং ১ (এক) এ প্রতীক দুটি দিয়ে সব ধরনের কাজ করে।

ডিজিটাল কম্পিউটারের বৈশিষ্ট

  • ফলাফল সরাসরি মনিটরে প্রদর্শিত হয় অথবা অন্য কোন আউটপুট ডিভাইসে প্রদর্শিত হয়।
  • একই কম্পিউটার বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়।
  • কাজের সূক্ষ্মতা শতভাগ (১০০%)।

 

ডিজিটাল কম্পিউটারের ব্যবহার

  • আমরা যে সকল কম্পিউটার ব্যবহার করি সেগুলোর বেশিরভাগ সাধারণত ডিজিটাল কম্পিউটার।

 

হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybrid Computer)

হাইব্রিড কম্পিউটার কাকে বলে? (What is a Hybrid Computer?)

এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের সমন্বয়ে হাইব্রিড কম্পিউটার তৈরি করা হয়।

আরও পড়ুন:

ল্যাপটপের গতি বাড়ানোর উপায়

হেডফোন ও ইয়ারফোনের মধ্যে পার্থক্য

হাইব্রিড কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য

ইনপুট এনালগ প্রকৃতির তবে, আউটপুট ডিজিটাল প্রকৃতির হয়ে থাকে।

 

হাইব্রিড কম্পিউটারের ব্যবহার

  • হাসপাতালে রোগীর রক্তচাপ, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া, শরীরের তাপ ইত্যাদি নির্ণয় করতে হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
  • পরমাণু শক্তি উৎপাদন প্লান্টে হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
  • জঙ্গী বিমান, মহাকাশযান ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ ইত্যাদি ক্ষেত্রে হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

 

আকার, আয়তন ও ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে ডিজিটাল কম্পিউটারকে প্রধানত চারভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

  1. সুপার কম্পিউটার (Super Computer).
  2. মেইন ফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer).
  3. মিনি কম্পিউটার (Mini Computer).
  4. মাইক্রোকম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটার (Micro or Personal Computer)

 

সুপার কম্পিউটার (Super Computer)

সুপার কম্পিউটার কাকে বলে? (What is a Super Computer?)

ক্ষমতা ও আকৃতি ইত্যাদির ভিত্তিতে অতি বড় কম্পিউটারকে সুপার কম্পিউটার বলে। সুপার কম্পিউটার অনেক শক্তিশালী এবং অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কাজ করতে পারে। প্রতি সেকেন্ডে বিলিয়ন বিলিয়ন হিসাব করতে সক্ষম সুপার কম্পিউটার। তবে, সারা বিশ্বে এ কম্পিউটারের সংখ্যা খুব বেশি নয় ।

আরও পড়ুন:

মোবাইল অফিশিয়াল না আন অফিশিয়াল বুঝবেন যেভাবে

ই-সিম কী? ই-সিমের সুবিধা ও অসুবিধা এবং ব্যবহারের নিয়ম

সুপার কম্পিউটার এর ব্যবহার

  • সূক্ষ্ম বৈজ্ঞানিক গবেষণা কাজে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
  • নভোযান, জঙ্গী বিমান পরিচালনায় সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
  • ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
  • মহাকাশ গবেষণা কাজে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

এছাড়া আরও অনেক কাজে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

 

বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম সুপার কম্পিউটার

বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম সুপার কম্পিউটার হলো Sunway Taihulight (চীন)। সম্প্রতি ভারত ‘পরম’ নামে একটি সুপার কম্পিউটার তৈরি করেছে যা সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer)

মেইনফ্রেম কম্পিউটার কাকে বলে? (What is Mainframe Computer?)

আকারে সুপার কম্পিউটারের চেয়ে ছোট কিন্তু পার্সোনাল নয়, এরকম কম্পিউটারকে মেইনফ্রেম কম্পিউটার বলে। মেইনফ্রেম কম্পিউটার এমন একটি বড় কম্পিউটার যার সাথে অনেকগুলো কম্পিউটার বা ডাম্ব টার্মিনাল (Dumb terminal) যুক্ত করে এক সাথে অনেক মানুষ কাজ করতে পারে।

মেইনফ্রেম কম্পিউটার এর ব্যবহার

ব্যাংক, বীমা, অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানে মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। বৈজ্ঞানিক কর্ম তৎপরতা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানে মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়।

আরও পড়ুন:

ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই করার উপায়

টুইটার অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাকটিভ করার ‍নিয়ম

বাংলাদেশে মেইনফ্রেম কম্পিউটার

বাংলাদেশে ১৯৬৪ সালে স্থাপিত আইবিএম ১৬২০ কম্পিউটারটি ছিল মেইনফ্রেম কম্পিউটার।

 

মিনি কম্পিউটার (Mini Computer)

মিনি কম্পিউটার কাকে বলে? (What is Mini Computer?)

আকারে মেইনফ্রেম কম্পিউটারের চেয়ে ছোট কিন্তু পার্সোনাল কম্পিউটারের চেয়ে বড় এমন কম্পিউটারকে মিনি কম্পিউটার বলে। মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe Computer) এবং মিনি কম্পিউটার (Mini Computer) দিয়ে একই ধরনের কাজ করা যায় । মিনি কম্পিউটার আকারে ছোট ও কাজের ক্ষমতাও কম।

মাইক্রোকম্পিউটার (Microcomputer)

আকারে মেইনফ্রেম বা মিনি কম্পিউটারের তুলনায় অনেকগুন ছোট এমন কম্পিউটারকে মাইক্রোকম্পিউটার (Microcomputer) বলে। এজন্য মাইক্রোকম্পিউটারকে পার্সোনাল কম্পিউটার (Personal Computer) বা সংক্ষেপে পিসি (PC) বলে।

আরও পড়ুন:

যেসব কারণে বন্ধ হতে পারে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট

বাংলা ভাষায় ফেসবুক ব্যবহার করার উপায়

মাইক্রোকম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটারকে কয়েকটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। যথা-

  1. ডেস্কটপ (Desktop).
  2. ল্যাপটপ (Laptop).
  3. নেটবুক (Netbook).
  4. ট্যাবলেট পিসি বা ট্যাব (Tablet PC or Tab).
  5. পামপিসি বা পামটপ (Palm PC or Palmtop).

 

ডেস্কটপ (Desktop Computer)

ডেস্কটপ কাকে বলে? (What is a Desktop Computer)

ডেস্ক বা টেবিলে স্থাপন করে যে মাইক্রোকম্পিউটার (Microcomputer) ব্যবহার করা হয় তাকে ডেস্কটপ বলে। এটি টেবিলে স্থাপন করে কাজ করতে হয় এবং সহজে বহন করা যায়না। অফিস আদালতের নানা কাজে ডেস্কটপ কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

 

ল্যাপটপ (Laptop)

ল্যাপটপ কাকে বলে? (What is a Laptop)

ল্যাপ (Lap) অর্থাৎ কোলের উপর স্থাপন করে যে কম্পিউারে কাজ করা যায় তাকে ল্যাপটপ বলে। এটি আকারে ডেস্কটপ কম্পিউটারের তুলনায় অনেক ছোট হওয়ায় সহজে বহন করা যায়। ল্যাপটপ নোট বক বা পাওয়ার বুক ইত্যাদি নামেও পরিচিত। ১৯৮১ সালে প্রথম ল্যাপটপ কম্পিউটার বাজারে আনে এপসম কোম্পানি।

 

ল্যাপটপের সুবিধাসমূহ

  • ডেস্কটপ পিসির চেয়ে অনেক ছোট ও বিদ্যুৎসাশ্রয়ী।
  • কোলে উপর নিয়ে কাজ করা যায়।
  • লোড শেডিংয়ে ডেস্কটপ চালাতে হলে ইউপিএস ব্যবহার করতে হয়। যার ব্যাকআপ টাইম থাকে ১৫-৩০ মিনিট। কিন্তু ল্যাপটপের সাথে ব্যাটারী সংযুক্ত থাকে। বিদ্যুৎ না থাকলে মডেলভেদে ২-৮ ঘণ্টা চালানো যায়।
  • এটি সহজে বহনযোগ্য। আকারে ডেস্কটপ এর চেয়ে অনেক ছোট ও হালকা। ল্যাপটপ দেখতে অনেকটা ছোট ব্রিফকেসের মত।
  • এতে মাউসের পরিবর্তে টাচপ্যাড ব্যবহার করা হয়।

আরও পড়ুন:

যেভাবে বন্ধ করবো ফেসবুকের কমেন্ট সেকশন

ফেসবুক গ্রুপের নোটিফিকেশন বন্ধের উপায়

ল্যাপটপের অসুবিধাসমূহ

  • ডেস্কটপ পিসি একস্থানে থাকে । খুব বেশি নড়াচড়া করতে হয়না। যার কারণে হাত থেকে পড়ে বা অন্য কারণে ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু ল্যাপটপ বহনযোগ্য, তাই হাত থেকে পড়ে ভেঙ্গে যেতে পারে।
  • সাধারণ মানের ল্যাপটপের ক্ষমতা ডেস্কটপ এর তুলনায় অনেক কম। আবার ডেস্কটপের সমান ক্ষমতার ল্যাপটপের দাম আকাশ ছোঁয়া। কাজেই দামের দিক থেকে তুলনা করলে ল্যাপটপের সমকক্ষ ডেস্কটপ পিসির দাম অনেক কম।
  • ডেস্কটপ এর কোন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেলে সহজে পরিবর্তন করা যায়। কিন্তু ল্যাপটপের খুচরা যন্ত্রাংশ পাওয়া যেমন কষ্টকর, তেমনি তার দামও তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

 

নেটবুক (Netbook Computer)

নেটবুক কাকে বলে? (What is a Netbook Computer)

পূর্ণ আকারের চেয়ে তুলনামূলক ছোট কী-বোর্ড এবং ফ্লিপ-আপ মনিটর সম্বলিত এক ধরনের মোবাইল কম্পিউটারের নাম নেট বুক। এটি ল্যাপটপের চেয়ে ছোট তবে, পামটপের চেয়ে বড়।

নেটবুক এর সুবিধা

  • ব্যাটারির ব্যাকআপ সময় ল্যাপটপের চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি।
  • নেটবুক এর মনিটর ও কী-বোর্ড আকারে ছোট ।
  • ল্যাপটপের তুলনায় নেটবুক এর ওজন অনেক কম।
  • নেটবুক এর কোন অপটিক্যাল ডাইভ থাকে না।
  • নেটবুকের দাম ল্যাপটপের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম।

 

ট্যাবলেট পিসি বা ট্যাব (Tablet PC or Tab)

ট্যাবলেট পিসি কাকে বলে? (What is a Tablet PC?)

ট্যাবলেট পিসি এক ধরনের কম্পিউটার যার স্ক্রীনে হাতের আঙ্গুল দিয়ে স্পর্শ করে প্রয়োজনীয় কাজ করা যায়। ট্যাবলেট পিসিতে ভয়েস ইনপুট ব্যবস্থা থাকে যার সাহায্যে ব্যবহারকারী কথা বলার মাধ্যমে কম্পিউটারে নির্দেশ বা ডেটা ইনপুট করতে পারেন।

 

পামপিসি বা পামটপ (Palm Computer or Palmtop)

পামপিসি বা পামটপ কাকে বলে? (What is a Palm Computer or Palmtop)

পাম (Palm) অর্থাৎ হাতের তালুর মধ্যে রেখে যে কম্পিউটারে কাজ করা যায় তাকে পামটপ কম্পিউটার বা পামপিসি বলা হয়। একে পকেট পিসি বা পিডিএ (PDA = Personal Digital Assistance) ও বলা হয় ।

 

এরকম আরও তথ্য পেতে ভি;জিট করুন: Click here 

কম্পিউটার নিয়ে প্রাথমিক কিছু তথ্য-

কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেন ?

কম্পিউটারের জনক নিয়ে মতবাদ রয়েছে। তবে, ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিতের শিক্ষক অধ্যাপক চার্লস ব্যাবেজকে প্রথম কম্পিউটারের আবিষ্কারক বলা হয়।

কম্পিউটার এর জনক কে ?

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিতের শিক্ষক অধ্যাপক চার্লস ব্যাবেজ কম্পিউটার এর জনক।

কম্পিউটার কত সালে আবিষ্কার হয় ?

১৯৪২ সালে অধ্যাপক চার্লস ব্যাবেজ কম্পিউটার আবিষ্কার করেন।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button