কুড়িগ্রাম জেলার সকল তথ্য (যে কোন পরীক্ষার জন্য)
কুড়িগ্রাম জেলা পরিচিতি
কুড়িগ্রাম জেলা পরিচিতি
কুড়িগ্রাম জেলা কোন নদীর তীরে অবস্থিতঃ ধরলা।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিষ্ঠিত হয় কবেঃ ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি।
কুড়িগ্রাম মহকুমা প্রতিষ্ঠা হয় কবেঃ ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দের ২২ এপ্রিল।
কুড়িগ্রাম জেলার আয়তন কতঃ ২,২২৫.২৯ বর্গ কি.মি।
কুড়িগ্রাম জেলার সীমানাঃ উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের কুচবিহার জেলা, দক্ষিণে গাইবান্ধা জেলা, পূর্বে ভারতের আসাম প্রদেশের ধুবড়ী ও মেঘালয় রাজ্যের তুবা পার্বত্য জেলা এবং পশ্চিমে লালমনিরহাট ও রংপুর।
কুড়িগ্রামে ভৌগোলিক অবস্থাঃ ২৫°৪৫’হতে ২৫° ৭৫’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২৭′ হতে ৮৯°৪৭ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ।
কুড়িগ্রাম জেলার বার্ষিক গড় তাপমাত্রাঃ সর্বোচ্চ ৩২.৩° সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন ১১.২° সেলসিয়াস।
কুড়িগ্রাম জেলার বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতঃ ২৯৩১ মিলিমিটার।
কুড়িগ্রাম জেলার মোট উপজেলাঃ ৯টি; কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, রাজারহাট, উলিপুর,চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুর ও ফুলবাড়ি ।
কুড়িগ্রাম জেলার মোট থানাঃ ১১টি (১টি নৌ থানাসহ)। ৩টি; কুড়িগ্রাম, উলিপুর ও নাগেশ্বরী ।
কুড়িগ্রাম জেলার পৌরসভাঃ ৩ টি;কুড়িগ্রাম,উলিপুর,নাগেশ্বরী
কুড়িগ্রাম জেলার ইউনিয়নঃ ৭২টি।
কুড়িগ্রাম জেলার পোস্ট কোডঃ ৫৬০০।
কুড়িগ্রাম জেলার এন ডব্লিউ ডি কোডঃ ০৫৮১।
ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম জেলার দূরত্বঃ সড়ক পথে ৩৯৩ কি.মি. ও রেলপথে ৩৪৬ কি.মি.।
কুড়িগ্রাম জেলার জনসংখ্যাঃ ২০, ৬৯, ২৭৩ জন (২০১১ খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারী অনুযায়ী)।
কুড়িগ্রাম জেলার জনসংখ্যার ঘনত্বঃ ৯২০ জন (প্রতি বর্গ কি.মি.)।
কুড়িগ্রাম জেলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারঃ ১.৪৩%।
কুড়িগ্রাম জেলার শিক্ষার হারঃ ৪২.৫%।
কুড়িগ্রাম জেলার প্রধান ফসলঃ ধান, পাট, গম, আলু, তামাক, সরিষা, সুপারি, বাঁশ, কাউন, বাদাম,ভুট্টা
কুড়িগ্রাম জেলার উপজাতি সমূহঃ কুরি, কোচ, ওঁরাও ইত্যাদি।
কুড়িগ্রাম জেলার প্রধান ফল-মূলঃ আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, তরমুজ, লিচু ইত্যাদি ।
কুড়িগ্রাম জেলার নদ-নদীঃ ১৬টি; ব্রহ্মপুত্র নদ, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমর, ফুলকৃমণ, কেনানী হলহলিয়া, নীলকমল, গঙ্গাষর, শিয়ালদহ, জিঞ্জিরাম, বোয়ালমারী,কালো, ধরণী, কালজানি ও জালশিরা |
কুড়িগ্রাম জেলার প্রাকৃতিক সম্পদঃ উল্লেখযোগ্য কোন প্রাকৃতিক সম্পদ নেই।
খনিজ সম্পদঃ উল্লেখযোগ্য কোন খনিজ সম্পদ নেই।
কুড়িগ্রাম জেলার পত্র পত্রিকাঃ দৈনিক আজকের কুড়িগ্রাম, দৈনিক কুড়িগ্রাম খবর, দৈনিক সকালের কাগজ, দৈনিক বাংলার মানুষ, দৈনিক চাওয়া পাওয়া, সাপ্তাহিক ধরলা, সাপ্তাহিক গণকথা, সাপ্তাহিক তথ্যকথা, পাক্ষিক
কুড়িগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক: আপডেট জেনে নিবেন।
কুড়িগ্রাম জেলার নামকরণ
কুড়িগ্রাম জেলার নামকরণের ইতিহাস নিয়ে অনেক কিংবদন্তি ও লোকবাতি প্রচলিত রয়েছে। জানা যায়, কোন এক সময় মহারাজা বিশ্ব সিংহ কুড়িটি জেলে পরিবারকে উচ্চ শ্রেণির হিন্দুরূপে স্বীকৃতি দিয়ে এ অঞ্চলে প্রেরণ করেন। এ কুড়িটি পরিবারের আগমনের কাহিনী থেকে কড়িগ্রাম জেলার নামকরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বিলু কবীরের লেখা ‘বাংলাদেশের জেলা নামকরণের ইতিহাস’ বই থেকে জানা যায়, এখানে কুড়িটি মেঃ তৈলরীরী পরিবারের বসতি ছিল বলে এ রকম নামকরণ হয়েছে। অন্য আরেকটি লোকশ্রুতি হল, রংপুর অর্থাৎ এই অঞ্চল একদা কুচবিহার রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। মাছ ধরে বিক্রি করা কুচবিহারের এসব বাসিন্দাদের বলা হয় কোচ। সুবিধাবঞ্চিত নীচ শ্রেণির এই হিন্দু কোচদের কুড়িটি পরিবারকে সেখান থেকে এখানে বসতি স্থাপনের জন্য প্রেরণ করা হয়েছিল। ঐ কুড়িটি কোচ পরিবারের কারণে ‘কুড়িগ্রাম’ নামকরণ হয়েছে। আসার এখনও জানা যায়, এই অঞ্চলে কুরি বা কুরী নামক একটি হিন্দু আদিবাসী বা গোষ্ঠী বসবাস করত বলেই অঞ্চলটির নাম হয় ‘কুড়িগ্রাম’। অদ্যাবধি এখানে ‘কুরি’ নামক আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস লক্ষ করা যায় এবং এখনও এ অঞ্চলে কুড়ি হিসেবে গোনার পদ্ধতি চালু রয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলার ঐতিহ্য
চিলমারী নৌবন্দর, ভূরুঙ্গামারীর বঙ্গসোনাহাট রেলওয়ে ব্রিজ, রাজারহাটের পাঙ্গেশ্বরী মন্দির ও পাঙ্গা রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ, জয়মনিহাট জমিদার বাড়ি, জিয়া পুকুর, সিন্দুরমতি মেলা, ভাওয়াইয়া গান প্রভৃতি।
কুড়িগ্রাম জেলার দর্শনীয় স্থান
চিলমারী বন্দর: চিলমারী উপজেলায় পৃথিবীর অষ্টম বৃহত্তম নদ ব্রহ্মপুত্রের তীরে চিলমারী বন্দরের অবস্থান। বর্তমানে এই বন্দর নদীর নাব্যতা হ্রাসজনিত কারণে জাহাজ চলাচলের অনুপযোগী, কেবল পরিবহন ব্যবস্থাটিই টিকে আছে। সীমিত আকারে হলেও বন্দর বর্তমানেও ব্যবহৃত হচ্ছে ।
বঙ্গ সোনাহাট ব্রিজ: ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বঙ্গ সোনাহাট ইউনিয়নে দুধকুমার নদীর উপর বঙ্গ সোনাহাট ব্রিজ অবস্থিত। ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজরা তাদের সৈন্য ও রসদ চলাচলের জন্য লালমনিরহাট থেকে ভুরুঙ্গামারী হয়ে ভারতের গোহাটী পর্যন্ত যে রেল লাইন স্থাপন করে তারই অংশ হিসেবে বঙ্গ সোনাহাট রেলওয়ে ব্রিজ তৈরি করা হয়। ব্রিজটি প্রায় ১২০০ ফুট লম্বা
কুড়িগ্রাম জেলার পুরাকীর্তি
পাঙ্গা জমিদার বাড়ির ধ্বংসাবশেষ: এটি রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নে অবস্থিত। জমিদাররাণী লক্ষীপ্রিয়ার মৃত্যুর পর তাঁর দত্তক পুত্র দেবেন্দ্র নারায়ণ কোঙর’ উপাধি ধারণ করে ইংরেজ আমলে জমিদারি পরিচালনা করেন। তাঁর সময়ই এই জমিদারি অবস্থার অধঃপতন ঘটাতে থাকে এবং কালক্রমে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। বর্তমানে টিকে আছে শুধু ভাঙ্গা ইট পাটকেল ও একটি শান বাঁধা পুকুর। এছাড়া প্রায় অক্ষত অবস্থায় টিকে আছে পাঙ্গা জমিদারের কাচারি ঘর ।
এছাড়াও নয়ারহাটে (রাজারহাট) মোগল আমলের মসজিদের ধ্বংসাবশেষ (১১৭৬ হিজরী), ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাটেশ্বরী বাজারের নিকট একটি পুরনো মসজিদের ধ্বংসাবশেষ (মোগল আমল), মজিদেরপাড় গ্রামের ৩ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ (মোগল আমল ), আরবি ভাষায় খোদিত মসজিদের শিলালিপি, জয়মনির জমিদার বাড়ি, বিডিআর গেটে রক্ষিত পাপা রাজ্যের ২টি কামান, নাওডাঙ্গার (ফুলবাড়ি) পরিত্যাক্ত জমিদার বাড়ি ও মন্দির, রাজারহাটের পাঙ্গেশ্বরী মন্দির, দাসেরহাটের (কুড়িগ্রাম সদর) বিশালাকার কালিমূর্তি, ভিতরবন্দের জমিদার বাড়ির সামনে মঙ্গলচণ্ডী, কামাখ্যাদেবী লক্ষ্মী ও সত্যনারায়ণের বিগ্রহ, উলিপুরের কালী সিদ্ধেশ্বরী মন্দির প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
কুড়িগ্রাম জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব
বীর প্রতীক তারামন বিবি: তিনি কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১১নং সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন যার সেক্টর কমান্ডার ছিলেন আবু তাহের বীর কিংবা ১৪ বছর বয়সে ক্যাম্পে রান্নাবান্নার জন্য আসেন।রেজিমেন্টের সৈনিকদের সঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলার নদী- মোহনগঞ্জ, তারাবর, কোদালকাটি ও গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়িতে অগ্রবর্তী দলের হয়ে কয়েকটি সশস্ত্র যুদ্ধে বীরত্বের সাথে অংশগ্রহণ করেন। খাড়িয়াভাঙ্গা ও ভেলামারি খাল এলাকায় পাক ঘাঁটির অবস্থান সম্পর্কে তাঁর সংগৃহীত নির্ভুল তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছে সফল অভিযান।
সৈয়দ শামসুল হক: বাংলাদেশের প্রথিতযশা কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রবন্ধকার, অনুবাদক, চিত্রনাট্য রচয়িতা, সংলাপ লেখক ও গীতিকার সৈয়দ শামসুল হক ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২৭, ডিসেম্বর কুড়িগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সৈয়দ শামসুল হক একজন সব্যসাচী লেখক। তাঁর উপন্যাসের মধ্যে খেলারাম খেলে যা, নিষিদ্ধ লোবান, আয়না বিবির পালা: কবিতা গ্রন্থের মধ্যে একদা এ রাজ্যে, অপর পুরুষ: নাটকের মধ্যে পায়ের পাওয়ার পাওয়া যায়, নীলদংশন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। বাংলা একাডেমি পদক, একুশে পদক সহ অসংখ্য জাতীয় পদক ও সম্মাননায় এই সাহিত্যিক ভূসিত হয়েছেন।
এছাড়াও রয়েছেন ভারত ছাড় আন্দোলন ও তেভাগা আন্দোলনের নেতা ভবানী পাঠক, বর্তমান সংসদে বিরোধী দলীয় হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী, বীর বিক্রম মনসুর আলী, পনির উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।
কুড়িগ্রাম জেলার মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক
হাবিবুল্লাহ বাহার খান, রিয়াজউদ্দিন আহমেদ ভোলা মিঞা, নুরুল আমিন মজনু, সৈয়দ মনসুর আলী টুংকু, আহাম্মদ হোসেন সরকার, আহম্মদ আলী বকসী, জনাব আমানউল্যাহ, রবীন্দ্রনাথ (খোকন) সরকার, মোস্তফা মর্তুজা বিন হোসেন খন্দকার, অধ্যাপক হায়নার আলী, তাছাদ্দুক হোসেন, কানাই লাল সরকার, শামসুল হক চৌধুরী, ইউনুছ আলী, নুরুল ইসলাম পাপ্পু, সাদাকাত হোসেন (ছক্কু মিঞা) প্রমুখ।
কুড়িগ্রাম জেলার বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা
মোহাম্মদ আলী, মোঃ মমিনুল হক, আহাম্মেদ আলী, মোঃ আব্দুল জলিল সরকার, মোঃ ইউসুফ আলী সরকার, মোঃ আঃ সবুর ফারুকী, মোঃ আব্দুর রশিদ মিয়া, মোঃ সোলায়মান আলী, অসীম কুমার সরকার, মোঃ নুরুল ইসলাম, মোঃ নুর ইসলাম ব্যাপারী প্রমুখ।
কুড়িগ্রাম জেলার অন্যান্য তথ্য
⇒ ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ২০ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়।
কুড়িগ্রাম জেলার সংসদীয় আসন
কুড়িগ্রাম জেলার সংসদীয় আসন- ৪টি
কুড়িগ্রাম-১,নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলা
কুড়িগ্রাম-২,কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট ফুলবাড়ি উপজেলাকুড়িগ্রাম-৩,সাহেবের আলগা ইউনিয়ন ব্যতীত উলিপুর এবং অষ্টমীরচর নয়ারহাট ইউনিয়ন ব্যতীত চিলমারী উপজেলা।
কুড়িগ্রাম-৪,রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা এবং উলিপুরের সাহেবের আলগা ও চিলমারীর অষ্টমীরচর ও নয়ারহাট ইউনিয়ন।
###