নির্বাচন কমিশনের গঠন, কমিশনার নিয়োগ ও কার্যাবলী
নির্বাচন কমিশনারদের পদের মেয়াদ ও অপসারণ
নির্বাচন কমিশনের গঠন এবং নির্বাচন কমিশনের কাজ সমূহ
নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান এবং নির্বাচন কমিশনারদের পদ হলো সাংবিধানিক পদ। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি দক্ষ, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য বাংলাদেশের সংবিধানের ৭ম ভাগে নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা, নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ, তাদের পদের মেয়াদ ও দায়িত্ব সংক্রান্ত বিধান বর্ণিত হয়েছে। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
নির্বাচন কমিশন গঠন
১১৮ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক ৪ জন নির্বাচন কমিশনার (সর্বোচ্চ মোট ৫ জন) নিয়ে বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে।
আরও পড়ুন:
সংবিধান কাকে বলে? বাংলাদেশের সংবিধানের বৈশিষ্ট্য
সাংবিধানিক সরকার কি বা কাকে বলে? সাংবিধানিক সরকারের বৈশিষ্ট্যসমূহ ও সমস্যা
নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ
রাষ্ট্রপতির প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দিবেন। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা কী হবে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে সংবিধানে কিছুই বলা হয়নি। এসব বিধান সংসদের আইন দ্বারা নির্ধারিত হবে বলে সংবিধানে বলা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো আইন সংসদে প্রণিত হয়নি। বরং নির্বাচন কমিশনারদের মনোনয়ন ও নিয়োগ সরকারের ইচ্ছার উপরই নির্ভর করছে।
নির্বাচন কমিশনারদের পদের মেয়াদ ও অপসারণ
১১৮ (৩) নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনারদের পদের মেয়াদ কার্যভার গ্রহণের তারিখ হতে ৫ বছর পর্যন্ত। এখানে কমিশনারদের কোনো নির্বাচন কমিশনার রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে পদত্যাগ করতে পারবে। বয়সের কোনো শর্ত নেই ।কর্মাবসানের পর তারা অন্যকোনো সরকারি কর্মে নিয়োগ লাভের যোগ্য হবে না। নির্বাচন কমিশনারদের অপসারণের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা যেসব কারণে ও যে পদ্ধতিতে অপসারিত হতে পারেন, নির্বাচন কমিশনাররাও সেই সব কারণে এবং অনুরূপ পদ্ধতিতে অপসারিত হতে পারেন।
আরও পড়ুন:
সাম্য কী বা কাকে বলে? সাম্য কত প্রকার ও কী কী?
আইন কি বা আইন কাকে বলে? আইনের সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য ও উৎস কী?
নির্বাচন কমিশনের কার্যাবলি
সংবিধানের ১১৯ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নির্বাচন কমিশনারদের কাজের স্বাধীনতা ১১৮ (৪) নং অনুচ্ছেদে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনারগণ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকবে এবং সংবিধান ও আইনের অধীন থাকবে।
- রাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে। সংসদ সদস্যদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে। সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ করবে।
- রাষ্ট্রপতির পদের এবং সংসদের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুত করবে।
- আইন দ্বারা আরোপিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন করবে।
বাংলাদেশের ন্যায় সংসদীয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থায় নির্বাচন কমিশন সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের সংবিধানে নির্বাচন কমিশনের গঠন ও কার্যক্ষমতা সুস্পষ্ট উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে পারে না। ক্ষমতাসীন দলের পক্ষেই নির্বাচন কমিশনকে কাজ করতে হয় যা গণতন্ত্রের জন্য মোটেই সুখকর নয়। তাই প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী সংস্থায় পরিণত করা প্রয়োজন বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
########################
Related Keyword: নির্বাচন কমিশন কি, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কি, নির্বাচন কমিশন কিভাবে গঠিত হয়, নির্বাচন কমিশন কি ধরনের প্রতিষ্ঠান, নির্বাচন কমিশন বলতে কি বুঝ, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন মানে কি, নির্বাচন কমিশন কি ব্যাখ্যা কর, নির্বাচন কমিশন গঠন কি, নির্বাচন কমিশন একটি, নির্বাচন কমিশনের গঠন ও কার্যাবলী,
নির্বাচন কমিশনের গঠন