রংপুর জেলার সকল তথ্য (যে কোন পরীক্ষার জন্য)

রংপুর জেলা পরিচিতি

রংপুর জেলা পরিচিতি

রংপুর জেলা কোন নদীর তীরে প্রতিষ্ঠিতঃ তিস্তা।

রংপুর জেলা প্রতিষ্ঠা হয় কত সালেঃ ১১৭২ খ্রিস্টাব্দে।

রংপুর জেলার আয়তন কতঃ ২,৪০০.৫৬ বর্গ কিলোমিটার (বাংলাপিডিয়া ২৩০৮ বর্গ কি.মি.) ।

রংপুর জেলার সীমানাঃ উত্তরে লালমনিরহাট জেলা ও তিস্তা নদী, দক্ষিণে গাইবান্ধা ও দিনাজপুর জেলা, পূর্বে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলা এবং পশ্চিমে দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলা।

রংপুর জেলার ভৌগোলিক অবস্থানঃ ১৫৩০ থেকে ১৬°৩২′ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৭ থেকে ৮৯°৩২′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। ।

রংপুর জেলার গড় তাপমাত্রা কতঃ সর্বোচ্চ ৩২.৩° সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন ১১.২° সেলসিয়াস

রংপুর জেলার বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতঃ ২১৯.৪৫ মিলিমিটার ।

রংপুর জেলায় উপজেলা কতটিঃ ৮টি; রংপুর সদর, গঙ্গাচড়া, তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ, কাউনিয়া, পীরগাছা, মিঠাপুকুর ও পীরগঞ্জ ।

রংপুর জেলায় থানা কতটিঃ ৮টি।

রংপুর জেলায় সিটি কর্পোরেশন কয়টিঃ ১টি; রংপুর সিটি কর্পোরেশন (ওয়ার্ড-৩৩ টি)।

রংপুর জেলায় পৌরসভা কয়টিঃ৩টি; বদরগঞ্জ, হারাগাছ ও পীরগঞ্জ

রংপুর জেলায় মোট ইউনিয়ন কয়টিঃ ৭৬টি।

রংপুর জেলার পোস্ট কোডঃ ৫৪০০।

রংপুর জেলার এন ডব্লিউ ডি কোডঃ ০৫২১।

ঢাকা থেকে রংপুরের দূরত্বঃ সড়ক পথে ৩৩৫ কি. মি. ও রেলপথে ৪৩৬ কি.মি. ।

রংপুরের জনসংখ্যাঃ ২৮,৮১,০৮৬ জন (২০১১ খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারী অনুসারে)।

রংপুরের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারঃ ১.২৪%

রংপুর জেলার জনসংখ্যার ঘনত্বঃ ১,২০০ জন (প্রতি বর্গ কি.মি.) ।

রংপুর জেলার শিক্ষার হারঃ ৪৮.৫% (আদমশুমারি ২০১১ অনুসারে) ।

রংপুরে বসবাসরত উপজাতিঃ ওরাও, পাহাড়ি, মুশহর, সাঁওতাল, রাজবংশী, পাহান, তুরি ইত্যাদি।

রংপুর জেলার প্রধান ফসলঃ ধান, পাট, তামাক, আলু, আখ, শাক-সবজি ইত্যাদি।

রংপুর জেলার প্রধান ফলঃ আম, জাম, কাঠাল, বাউকুল, বাতাবি লেবু ইত্যাদি। রুটি; তিস্তা, যমুনেশ্বরী, ঘাঘট, আখিরা ও করতোয়া।

রংপুর জেলার খনিজ সম্পদঃ পীরগঞ্জের খালাশপীরে কয়লা ও মিঠাপুকুরের রানীপুকুরে তামার সন্ধান পাওয়া গেছে।

রংপুর জেলার পত্র পত্রিকাঃ দৈনিক যুগের আলো, দৈনিক দাবানল, দৈনিক পরিবেশ, দৈনিক আখিরা, দৈনিক মায়াবাজার, দৈনিক সাইফ, দৈনিক প্রথম খবর, দৈনিক রংপুর চিত্র, দৈনিক বাহের সংবাদ, দৈনিক বায়ান্নর আলো প্রভৃতি।

জেলা প্রশাসকঃ আপডেট জেনে নিবেন।

 

রংপুর জেলার ইতিহাস

বাংলাদেশের প্রাচীনতম অংশের নাম বরেন্দ্র বা বরেন্দ্রী। রংপুর সমতল বরেন্দ্র অঞ্চলের অন্তর্গত। পরবর্তী সময়ে এ অঞ্চল গৌড় অঞ্চল বলে পরিচিতি লাভ করে।

 

রংপুর জেলার নামকরণ

লোকমুখে প্রচলিত আছে যে, ‘রঙ্গপুর’ থেকে কালক্রমে রংপুর নামটি এসেছে। এই অঞ্চলে মাটি উর্বর হবার কারণে উপমহাদেশে ইংরেজরা এখানে নীলের চাষ শুরু করে। সেই নীলকে স্থানীয় লোকজন রঙ্গ নামেই জানত। কালের বিবর্তনে সেই রস থেকে রঙ্গপুর এবং তা থেকেই আজকের রংপুর। অপর একটি প্রচলিত ধারণা থেকে জানা যায় যে, মহাভারতের সময়ে প্রাণ জ্যোতিষপুরের রাজা ভগদত্তের রঙ মহল ছিল রংপুরে এবং সেই রঙ মহল হতে নাম হয়েছে রঙ্গপুর। কেউ কেউ মনে করেন, রংপুরে বস্ত্ররঞ্জনী কারখানা ছিল। পাট নির্মিত বস্ত্রে বা চটে রং করা হত বলে রংপুরকে রংরেজপুর বলা হত এবং তার পরিবর্তে হয়েছে রঙ্গপুর (রংপুর)। রংপুর শব্দটি ফার্সি শব্ হওয়ায় অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজীর শাসন আমলেই রংপুরের নাম রঙ্গপুর হয়েছে।

 

রংপুর জেলার ঐতিহ্য

শতরঞ্জি, হাড়িভাঙ্গা আম, বিরল কাইজেলিয়া বৃক্ষ প্রভৃতি।

 

রংপুর জেলার দর্শনীয় স্থান

রংপুর সদর উপজেলার ভিন্নজগত, রংপুর শহরের অদূরে তাজহাট জমিদার বাড়ি, রংপুরের জিরো পয়েন্টের কাছারি বাজার এলাকার মুন্সিপাড়ায় হযরত মাওলানা কেরামত আলী জৈনপুরী (রহঃ) এর মাজার ও মসজিদ, কাছারি বাজার এলাকায় অবস্থিত টাউন হল, রংপুর শহরের পাশেই চিকলির বিল, রংপুর সেনানিবাসের কাছে ধাপ কটকী পাড়া রোডে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, শাশ্বত বাংলা, রংপুর চিড়িয়াখানা, রংপুর কারমাইকেল কলেজ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা পরিষদ ভবন, শিরীন পার্ক, মন্থনার জমিদার বাড়ি, মাহিগঞ্জের কাজিটারী মসজিদ, রংপুর টাউন হল, রংপুর শহরতলীর ইটাকুমারীর জমিদার শিবচন্দ্র রায় এর রাজবাড়ি, রংপুর শহরের দেওয়ানবাড়ি রোডে অবস্থিত দেওয়ানবাড়ির জমিদারবাড়ি, লালদীঘির নয় গম্বুজ মসজিদ, মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দে বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র ও পায়রাবন্দ জমিদার বাড়ি, মিঠাপুকুরের তিন কাতারের মসজিদ, পীরগঞ্জ উপজেলার দ্বারিয়াপুরে হাতীবান্ধা মাজার শরীফ, ঝাড়বিশলায় কবি হেয়াত মামুদের সমাধি, বিশ্বরোড সংলগ্ন ড. ওয়াজেদ মিয়ার তোরণ, খালাশপীর ৫নং মদনখালী ইউনিয়নে খয়েরবাড়ি গ্রামের আনন্দ নগর, পীরগাছার দেবী চৌধুরাণীর রাজবাড়ি, কাউনিয়ার আনন্দ মঠ ও বেনারসী পল্লী প্রভৃতি ।

 

রংপুর জেলার পুরাকীর্তি

তাজহাট জমিদার বাড়ি: তাজহাট জমিদার বাড়ি রংপুর শহর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ও কিলোমিটার দূরে তাজহাটে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক প্রাসাদ যা এখন একটি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। জমিদার বাড়ির সামনে রয়েছে সমসাময়িককালে খননকত বিশাল আকৃতির এই 1 পুকুর। তাজহাট জমিদারবাড়ি মূলত গোবিন্দ লালের পুত্র গোপাল লাল (জি.এল.) রায় এর সাথে সম্পর্কযুক্ত। তাদের বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মান্নানলাল রায়। তিনি সুদূর পাঞ্জাব হতে রংপুরের সমৃদ্ধ স্থান মাহিগঞ্জে স্বর্ণ ব্যবসা করার জন্য এসেছিলেন। প্রথমে তিনি নানা ধরনের নারী দামী হীরা, মানিক, জহরতর্থচিত তাজ বা টুপির ব্যবসা করেছিলেন। উক্ত তাজ বিক্রির লক্ষ্যে এখনে হাট বসে যা পরবর্তীতে বিরাট প্রসিদ্ধি লাভ করে এবং এ তাজহাটকে কেন্দ্র করে এই জমিদার বাড়ির নামকরণ করা হয় তাজহাট জমিদার বাড়ি।

কেরামতিয়া মসজিদ ও মাজার: রংপুরের জিরো পয়েন্টের কাছারি বাজার এলাকা থেকে মাত্র ১০০ গজ দক্ষিণে মুন্সিপাড়ায় এর অবস্থান। ১৮০০-১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশে ইসলামি সংর আন্দোলনের সর্বাপেক্ষা সফলকাম ও গৌরবান্বিত ব্যক্তি মাওলানা কেরামত আলী (রঃ) বৈদ ১২১৫ হিজরী ১৮ মহরম জন্মগ্রহণ করেন। রংপুরে তিনি ইসলাম প্রচারের জন্য আসেন। কেরামতিয়া মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা। মসজিদ প্রাঙ্গণে তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।

 

রংপুর জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব

বেগম রোকেয়া মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করে বেগম রোকেয়ার পিতা ছিলেন পায়রাবন্দের জমিদারির সর্বশেষ উত্তরাধিকারী। বেগম রোকেয়া রক্ষি গ্রন্থগুলোর নাম মতিচূর (১ম ও ২য় খন্ড), Sultana’s Dream (সুলতানার স্বপ্ন), পা অবরোধবাসিনী। তার শেষ লেখা ‘নারীর অধিকার। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া ইন্তেকাল করেন।

এছাড়াও রয়েছে বিশিষ্ট পুথিকার ও রাজনেতিক নেতা শাহ আবদুর রউফ, খোলাফায়ে রাশেদীনের প্রথম খলীফা হযরত আবুবকর (রাঃ) এর ৩৫তম অধস্তন পুরুষ মাওলানা কারামত আলী জৈনপুরী (রহঃ), রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, নীলফামারী জেলার ডিমলার জমিদার রাজা জানকীবল্লভ সেন, সমাজ সংস্কারক মুন্সী ছমিরউদ্দিন আহমদ, সাহিত্যসেবক ও সমাজসেবক তসলিমুদ্দিন আহমদ, বেগম রোকেয়ার বড় বোন স্বভাবকবি করিমুন্নেসা খানম, ইতিহাসবেত্তা হায়দার আলী চৌধুরী, খ্যাতনামা রাজনীতিক ইয়াকুব মাহফুজ আলী (জববেজ), রাজনীতিক-সাহিত্যিক-নাট্যকর্মী শিবেন্দ্রনাথ মুখার্জি, প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস, মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার খোন্দকার মুখতার ইলাহী, অধ্যাপক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নুরুল ইসলাম প্রমুখ।

 

মুক্তিযুদ্ধে রংপুরের স্বাধীনতা

স্বাধীনতাকামী রংপুরের মানুষ প্রথম যুদ্ধ শুরু করে ৩ মার্চ, ১৯৭১ এবং রংপুর সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয় ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৭১।

মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ: রংপুরের শংকু সমজদার।

 

রংপুর জেলার শহীদ বুদ্ধিজীবী

অধ্যাপক চিত্ত রঞ্জন, অধ্যাপক রামকৃষ্ণ অধিকারী, অধ্যাপক সুনীল চক্রবর্তী, অধ্যাপক কালাচাদ রায়, অধ্যাপক আব্দুর রহমান, অধ্যাপক সোলায়মান প্রমুখ।

 

রংপুর জেলায় অবস্থিত গণকবর

দমদমা ব্রিজ, দমদমা বাজার (মিঠাপুকুর উপজেলা), আংরাজ ব্রিজ, মাদারগঞ্জবাজার (পীরগঞ্জ উপজেলা) ইত্যাদি।

 

রংপুর জেলার সংসদীয় আসন

রংপুরের সংসদীয় আসন- ৬টি।

রংপুর-১,গঙ্গাচড়া উপজেলা।

রংপুর-২,তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ।

রংপুর-৩,রংপুর সদর উপজেলা।

রংপুর-৪,পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলা।

রংপুর-৫, পীরগঞ্জ উপজেলা।

রংপুর-৬, মিঠাপুকুর উপজেলা ।

###

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button