মুমিন কাকে বলে? মুমিনের কি কি বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক? মুসলিম ও মুমিনের পার্থক্য

মুসলিম এর সাথে মুমিনের পার্থক্য

মুমিন

মহান আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কুরআন এর বিভিন্ন স্থানে প্রত্যেক মুসলমানকে মুমিন হওয়ার জন্য গুরুত্বারূপ করেছেন। এছাড়া, আমাদের প্রিয় নবীও (স:) মুমিনের বিষয়টি গুরুত্বারূপ করেছেন। মহান আল্লাহ ও প্রিয় নবী (স:) মানুষকে মুমিন না হয়ে মৃত্যুবরণ করতে নিষেধ করেছেন। একজন লোককে যে সকল গুনের কারণে তাকে মুমিন হিসাবে চিহ্নিত করা যায়, সেসকল গুনেই মুমিনের বৈশিষ্ট্য। আর এসকল বৈশিষ্ট্যের কারণেই সাধার‘ণ মুসলমান থে‘কে মুমিন‘কে আলাদা করা সম্ভ‘ব হয়ে থাকে।

মুমিন কাকে বলে?

মুমিন একটি আরবি শব্দ যা ঈমান শব্দ থেকে এসেছে। এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বিশ্বাসী, ঈমানদার, আস্থাজ্ঞাপনকারী ইত্যাদি। এই দ্বারা একজন খাঁটি অনুগত মুসলমানকে বুঝায় যে দৃঢভাবে ইসলামকে মনের মধ্যে ধারণ করেছে এবং মহান আল্লাহর কাছে নিজেকে পূর্ণরুপে সমর্পণ করেছে।

 

আরও পড়ুন:

তাওহীদ কাকে বলে? তাওহীদ কয় প্রকার ও কি কি?

নিফাক শব্দের অর্থ কি? নিফাকের কুফল এবং প্রতিকারের উপায়

ইসলামী পরিভাষায়, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর একত্ববাদে পূর্ণ আন্তরিকতার সাথে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং আল্লাহর নির্দেশ মেনে সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে তাকে মুমিন বলে।

নারী মুমিনদের ক্ষেত্রে নারী মুমিন না হয়ে মুমিনা শব্দটি ব্যবহৃত হয়।

কুরআন হাদীসের মতে মুমিনের পরিচয় হলো –

মহান আল্লাহ তা‘লা কুরআনে উল্লেখ্য করেছেন, প্রকৃত মুমিন তারা‘ই যারা মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনা‘র প‘র আর সন্দেহে পড়ে‘না এবং নিজেদে‘র মাল ও জান দিয়ে মহান আল্লাহর পথে জেহাদ করে, এরাই সত্যবাদী।’ (সুরা হুজরাত : আয়াত ১৫)

রাসূল (সাঃ) বলেন, মুমিন সেই ব্যক্তি যে মহান আল্লাহর খুশির জন্য বন্ধুত্ব করে ও দুশমনি করে এবং আল্লাহর খুশির জন্য দান করে ও দান করা বন্ধ রাখে।

মুমিনের গুণাবলি বা বৈশিষ্ট্য –

  • আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করা।
  • ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।
  • নবী-রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।
  • আসমানী কিতাবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।
  • পুনরুথান দিবসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।
  • পরকালের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।
  • তাকদীরের ভালো মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা ইত্যাদি।

মুসলিমের সাথে মুমিনের পার্থক্য-

ইসলাম ধর্মকে নিজ ধর্ম বলে বিশ্বাস ও স্বীকার করে নেওয়া এমন ব্যক্তিকে মুসলিম বলে। অন্যদিকে, ব্যক্তি মহান আল্লাহর একত্ববাদে পূর্ণ আন্তরিকতার সাথে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং আল্লাহর নির্দেশ মেনে সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে তাকে মুমিন বলে।

তাই বলা যায়, সকল মুমিন ব্যক্তি মুসলিম, কিন্তু সকল মুসলিম ব্যক্তি মুমিন নয়।

মোটকথা, ইসলামের ছায়াতলে এসে যদি কোন ব্যক্তি মহানা আল্লাহর সকল বিধিবিধান মেনে চলে এবং সে অনুযায়ী জীবনযাপন করে তাহলে সেই ব্যক্তিই হবে মুমিন । মহান আল্লাহ তা‘লা আমাদের সবাইকে মুমিন হওয়ার তওফিক দান করুন।

###

 

আরও পড়ুন:

আসমানি কিতাব কাকে বলে? কয়টি ও কি কি?

হিজরত শব্দের অর্থ কি? হিজরত কাকে বলে?

 

এই পোস্ট থেকে আমরা মুমিন কাকে বলে? মুমিনের কি কি বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক? মুসলিম ও মুমিনের পার্থক্য  সম্পর্কে জানতে পারলাম। পোস্টটি কেমন লাগলো আমাদের কমেন্ট করে জানান। ধন্যবাদ।

Back to top button