তীব্র শিক্ষক-সংকট নিয়ে চলছে দেশের টেক্সটাইল কলেজগুলো
এডুওয়াচ ডেস্ক
দেশের সরকারি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে চলছে শিক্ষক সংকট। তবে গুরুতর এই সমস্যার সমাধানে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) অধীনে থাকা ১১টি সরকারি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শিক্ষক প্রয়োজন ৬৩০ জন। তবে বর্তমানে সেখানে বিদ্যমান কলেজগুলোতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৮১ জন।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মতে, প্রতিটি কলেজে ৭০টি শিক্ষক পদ থাকা প্রয়োজন, কিন্তু বিদ্যমান ৯টি কলেজে মোট ৬৩০টি পদের বিপরীতে মাত্র ২৭১টি পদ অনুমোদিত। আবর এতগুলো পদের অনুমোদন থাকলে সেখানে কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র ৮১।
কিছু কলেজে এই সংকট আরো প্রকট। বিশেষ করে, জামালপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে মাত্র তিনজন শিক্ষক রয়েছেন, আর গোপালগঞ্জের শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ৩৮টি অনুমোদিত পদের বিপরীতে মাত্র আটজন শিক্ষক কর্মরত আছেন। ভোলা টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটেও ২০ জন শিক্ষকের মধ্যে মাত্র ৩ জন কর্মরত রয়েছেন। শিক্ষক সংকটের কারণে ব্যবহারিক শিক্ষার মানকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সংকটের মূল কারণ হলো বস্ত্র অধিদপ্তরের ২০১৪ সালের ত্রুটিপূর্ণ নিয়োগ বিধি। এই বিধির কারণে নতুন কলেজগুলোতে, যেমন রংপুর, গোপালগঞ্জ ও জামালপুরে কোনো স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে পুরোনো কলেজগুলো থেকে সংযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষক এনে কাজ চালানো হচ্ছে, যা পুরোনো কলেজগুলোতেও সংকট আরো তীব্র করে তুলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় অনেক সময় অতিথি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস করানো হয়। অতিথি শিক্ষকরা দ্রুত কোর্স শেষ করে চলে যান, ফলে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারছে না। তাদের শিক্ষার মান তলানিতে নেমে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তীব্র শিক্ষক সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শিক্ষক সংকট রয়েছে। এ সংকট তৈরি হয়েছে সঠিক নিয়োগবিধি না থাকার কারণে। ৫০৯টি পদ আছে, যেটি নিয়োগবিধিতে নেই। জনপ্রশাসনের সঙ্গে প্রতিদিনই এ নিয়ে মিটিং হচ্ছে। খুব দ্রুতই হয়ে যাবে। নিয়োগ বিধির খসড়া জানুয়ারিতেই আমরা জনপ্রশাসনে পাঠিয়েছিলাম।’
শহিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আমি দ্রুত সমাধান চেয়েছিলাম। তখন জনপ্রশাসন সচিব বলেছিলেন ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে আমরা বিষয়টি সমাধান করব। তবে আমরা আশা করছি, এ মাসের মধ্যেই এ নিয়োগবিধি কেবিনেটে উত্থাপিত হবে।’
/এমআইএইচ