জুলাই গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব কোনো একক দল বা গোষ্ঠীর নয়: তারেক রহমান

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব কোনো একক দল বা গোষ্ঠীর নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, “আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব  কোন একক গোষ্ঠী বা দলের নয়। সকল শ্রেণী পেশার মানুষ একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য,  অধিকার হারা মানুষ নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলেন।”

সোমবার বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী বিরোধী আন্দোলন ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে পেশাজীবীদের অবদান নিয়ে পেশাজীবী সমাবেশ এবং শহীদ-নির্যাতিত পরিবারকে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

“নিত্য নতুন রাজনৈতিক হিসেব নিকেশ কিংবা রাজনৈতিক মেরুকরণের আড়ালে আমরা গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদের প্রাণের আত্মত্যাগের কথা যেন ভুলে না যাই,” যোগ করেন তিনি।

এক বছরেও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের তালিকা চূড়ান্ত করতে না পারার বিষয়টিকে চরম ব্যর্থ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আর কিছুদিন পর অন্তবর্তীকালীন সরকারের এক বছর পূর্তী হবে। কিন্তু  এখনও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের তালিক চূড়ান্ত হয়নি। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমার কাছে মনে হয়েছে দীর্ঘ এক বছরেও শহীদদের সংখ্যা চূড়ান্ত বা তালিকা চূড়ান্ত করতে না পারার বিষয়টি ভবিষ্যতের ইতিহাসে চূড়ান্ত ব্যর্থ হিসেবে চিত্রায়িত হবে।”

এসময় তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে অধিক গুরুত্বের সাথে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের তালিকা চূড়ান্ত করার আহ্বান জানান।

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় তারেক রহমান নিহতদের আত্নার মাগফেরাত কামনা করেন এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের তাদের সুস্থতা কামনা করেন।  তিনি বলেন, ‘বিএনপিসহ আমাদের যতগুলো অঙ্গ সংগঠন রয়েছে সবাইকে এই ঘটনায় এগিয়ে আসার জন্য সার্বিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের অবস্থান থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে তাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য সকল নেতাকর্মীকে আমরা নির্দেশ দিয়েছি।’

গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পরেও দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে আসতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ” গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষাক্ষেত্রের কোন স্তরেই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পরেও স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফেরানো সম্ভব হয় নি। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্ধকারে রেখে শুধুমাত্র পুঁথিগত সংস্কার মাধ্যমে আলোকিত বাংলাদেশ গড়ার চিন্তা অবাস্তব।”

 

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থা উপযোগী নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।  তিনি বলেছেন, “আমরা দেখেছি কয়েকটি রাজনৈতিক দল হঠাৎ করে দেশে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দাবি করেছে। বাংলাদেশে পিআর ব্যবস্থা প্রবর্তনের অর্থ হচ্ছে রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে বিচ্ছিন্নতাবাদ, ফ্যাসিবাদ এবং  চরমপন্থার বিকাশের পথ সুগম করে দেওয়া। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে  পিআর পদ্ধতিতে  নির্বাচনী ব্যবস্থা বিভ্রান্তিমূলক সমাজ সৃষ্টি এবং অস্থিতশীল সরকারের কারণ হয়ে উঠতে পারে। যে কারণে দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়তে পারে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button