ভুগোল কাকে বলে? ভূগোলের উৎপত্তি ও প্রকারভেদ

আজ আমরা ভূগোল নিয়ে আলোচনা করবো। এ আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারবেন ভূগোল কাকে বলে, ভুগোল এর ইংরেজি, ভূগোল অর্থ কি, ভূগোলের ধারণা, ভূগোল এর জনক কে, ভূগোলের ইতিহাস ইত্যাদি।

ভুগোল শব্দের উৎপত্তি

আমরা পৃথিবীতে জীবন-যাপন করি। এই পৃথিবী আমাদের আবাসভূমি। মানুষের আবাসভূমি হিসেবে পৃথিবীর বর্ণনা হলো ভূগোল। ভূগোলের ইরেজি প্রতিশব্দ হচেছ ‘Geography’ । ‘Geography’ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন প্রাচীন গ্রিসের ভূগোলবিদ ইরাটোসথেনিস। ‘Geo’ ও ‘graphy’ শব্দ দু’টি মিলে ‘Geography’ শব্দটি তৈরি হয়েছে। যেখানে ‘Geo’ শব্দের অর্থ হলো “ভূ” বা পৃথিবী এবং ‘graphy’ শব্দের অর্থ হলো বর্ণনা। তাই, ‘Geography’ শব্দটির অর্থ হলো পৃথিবীর বর্ণনা। এই ‘Geography শব্দটি থেকে ভূগোল শব্দটি এসেছে।

ভূগোল কাকে বলে?

মানুষের আবাসভূমি হিসেবে পৃথিবী ও এর অধিবাসীদের আলোচনাকে ভূলোল বলে। ভূলোলের সংঙ্গা দিতে গিয়ে অধ্যাপক ম্যাকনি (Professor E. A. Macnee) বলেছেন, ভৌত ও সামাজিক পরিবেশে মানুষের কর্মকাণ্ড বা জীবনধারা নিয়ে যে বিষয় আলোচনা বা বর্ণনা করে তাকে ভূগোল বলে।

অধ্যাপক ডাডলি স্ট্যাম্পের (Professor L. Dudley Stamp) মতে, পৃথিবী ও এর অধিবাসীদের আলোচনাকে ভূগোল বলে।

ভূগোলকে কোন কোন ভূগোলবিদ পৃথিবীর বিবরণ, আবার কেউ কেউ পৃথিবীর বিজ্ঞান বলে অভিহিত করেছেন। অধ্যাপক কার্ল রিটার (Professor Carl Ritter) ভূগোলকে পৃথিবীর বিজ্ঞান বলেছেন।

আলেকজান্ডার কন হামবোল্টের (Alexander Von Humbolt) মতে, ভূগোল হলো প্রকৃতির সাথে সম্পর্কিত বিজ্ঞান, প্রকৃতিতে যা কিছু আছে তার বর্ণনা ও আলোচনা এর অন্তর্ভুক্ত।

ভূগোলের প্রধান কাজ হলো এই কার্যকারণ উদ্ঘাটন করা। পৃথিবীর পরিবেশের সীমার মধ্যে থেকে মানুষের বেঁচে থাকার যে সংগ্রাম চলছে সে সম্পর্কে যুক্তিপূর্ণ আলোচনাই ভূগোল।

আমাদের পিডিএফ বই কালেকশান গুলো পেতে 

ভুগোলের জনক কে

ইরেটসথে হলেন ভূগোলের জনক। তবে, আধুনিক ভূগোলের জনক আলেকজান্ডার ভন হামবোল্ট।

ভূগোলের ইতিহাস

বলা হয়ে থাকে, ভূগোল এর ইতিহাস শত শত বছরের পুরানো। মানব সভ্যতা যখন বুঝতে পেরেছে বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিভিন্ন স্থানে ছড়ানো সেই সময় থেকে মানুষের নিকট স্থানের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে।

গ্রিক পণ্ডিতগণ পৃথিবী সম্পর্কিত তথ্যাবলী সংগ্রহ করতেন। জ্ঞান চর্চার সুবিধার্তে তারা এসব তথ্যাবলীকে দুইটি প্রধান অংশে ভাগ করেন। যথা-

  • ভূগোল ও মহাজাগতিক বিদ্যা (আকাশ, তারকারাজি)
  • মহাজগত বিষয়ক জ্ঞান চর্চা)।

 

পরিবেশের উপাদান

পরিবেশের উপাদানকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-

  • জড় উপাদান
  • জীব উপাদান

জীব উপাদান কাকে বলে-

যাদের জীবন আছে, বৃদ্ধি আছে, জন্ম ও মৃত্যু আছে তাদের জীব বলে। যেমন, মানুষ, গাছপালা, পশুপাখি। এরা পরিবেশের জীব উপাদান। জীব উপাদান নিয়ে গড়া পরিবেশই হলো জীব পরিবেশ।

জড় উপাদান কাকে বলে-

যাদের জীবন নেই, বৃদ্ধি নেই, জন্ম ও মৃত্যু নেই তাদের জড় বলে। যেমন- মাটি,  বায়ু, পর্বত, নদী, পাহাড়, ইত্যাদি। এরা পরিবেশের জড় উপাদান। জড় উপাদান নিয়ে গড়া  পরিবেশই হলো জড় পরিবেশ।

 

ভূগোলের পরিধি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশ, নতুন নতুন উদ্ভাবন ও আবিষ্কার, চিন্তা-ধারণার বিকাশ, সমাজের মূল্যবোধের পরিবর্তন ইত্যাদি ভূগোলের পরিধিকে আরও বিস্তৃত করেছে। এখন নানান বিষয় যেমন- ভূমিরূপবিদ্যা, আবহাওয়াবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, সমাজবিদ্যা, সমুদ্রবিদ্যা, মৃত্তিকাবিদ্যা, অর্থনীতি, রাজনীতি ইত্যাদি ভূগোল বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

ভুগোলের শাখা
ভুগোলের শাখা

প্রাকৃতিক ভূগোল কাকে বলে-

ভূগোলের যে শাখায় ভৌত পরিবেশ ও এর মধ্যে কার্যরত বিভিন্ন প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত থাকে তাকে প্রাকৃতিক ভূগোল বলে। প্রাকৃতিক ভূগোলের আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে- পৃথিবীর ভূমিরূপ ও এর গঠন প্রক্রিয়া, বায়ুমণ্ডল, বারিমণ্ডল, জলবায়ু ইত্যাদি।

আমাদের পিডিএফ বই কালেকশান গুলো পেতে 

মানব ভূগোল কাকে বলে-

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ কীভাবে বসবাস করছে, কীভাবে জীবিকা নির্বাহ  করছে ই্ত্যাদি অনুসন্ধান মানব ভূগোলের আলোচ্য বিষয়। মানব ভূগোলের আলোচ্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে- অর্থনীতি, জনসংখ্যা, রাজনীতি, পরিবহন, নগর ইত্যাদি।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button