বগুড়া জেলার সকল তথ্য (যে কোন পরীক্ষার জন্য)
বগুড়া জেলা পরিচিতি
বগুড়া জেলা পরিচিতি
বগুড়া জেলার পুরাতন নাম কিঃ পুণ্ড্রবর্ধন।
বগুড়া জেলা কোন নদীর তীরে অবস্থিতঃ করতোয়া।
বগুড়া জেলাজেলা প্রতিষ্ঠা হয় কবেঃ ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে।
বগুড়া জেলার আয়তন কতঃ২,৮৯৮.২৫ বর্গ কিলোমিটার।
বগুড়া জেলার সীমানাঃ উত্তরে গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট জেলা, দক্ষিণে নাটোর ও সিরাজগঞ্জজেলা, পূর্বে জামালপুর ও সিরাজগঞ্জ জেলা এবং পশ্চিমে জয়পুরহাট ও নওগা জেলা।
বগুড়া জেলার ভৌগোলিক অবস্থানঃ৮৯°০০′ থেকে ৮৯°৪০’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ এবং ২৪°৩০ থেকে ২৫°১০উত্তর অক্ষাংশ
বগুড়া জেলার বার্ষিক গড় তাপমাত্রা কতঃ সর্বোচ্চ ৩৪.৬° সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ১১.৯° সেলসিয়াস।
সমুদ্রতল হতে বগুড়ার উচ্চতা কতঃ ২০ মিটার।
বগুড়া জেলায় উপজেলা কয়টিঃ ১২টি; বগুড়া সদর, কাহালু, শিবগঞ্জ, গাবতলি, সোনাত আদমদীঘি, দুপচাচিয়া, নন্দীগ্রাম, শাহাজানপুর, সারিয়াকাি, শেরপুর ।
বগুড়া জেলায় পৌরসভা কতটিঃ ১০টি; বগুড়া, কাহালু, শিবগঞ্জ, গাবতলি, দুপচাচিয়া, নন্দীগ্রাম, শান্তাহার ও সারিয়াকান্দি ।
বগুড়া জেলায় ইউনিয়ন কতটিঃ ১০৮টি।
বগুড়া জেলার পোস্ট কোড কতঃ ৫৮০০।
বগুড়া জেলা এন ডব্লিউ ডি কোড কতঃ ০৫১।
ঢাকা থেকে বগুড়া জেলার দূরত্বঃ সড়ক পথে ২২৯ কি.মি. ও রেলপথে ৩৫৯ কি.মি. ।
বগুড়া জেলার জনসংখ্যা কতঃ ৩৪, ০০, ৮৭৪ জন (২০১১ খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারী অনুযায়ী)।
বগুড়া জেলার জনসংখ্যার ঘনত্ব কতঃ ১২০০ জন (প্রতি বর্গ কি.মি.)।
বগুড়া জেলা জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কতঃ১.২০%
বগুড়া জেলায় শিক্ষার হার কতঃ ৪৯.৪%
বগুড়া জেলার উপজাতিঃসাঁওতাল, ওঁড়াও প্রভৃতি ।
বগুড়া জেলার প্রধান ফসলকেনগুলোঃ ধান, পাট, গম, আলু, মরিচ, সরিষা, পটল, আলু ও অন্যান্য শাক-সবজি প্রভৃতি।
বগুড়া জেলার নদ-নদীঃ করতোয়া, বাঙালি, যমুনা, নাগর, হলহলিয়া, ইছামতি, মহিষাবান সুখদহ, ডাকুরিয়া, বেলাই, ভাদাই/ভদ্রাবতী, চন্দ্রবর্তী, গালই গজারিয়া, মানস/মোনাস, বানিয়াইয়ান, ইরামতি, ভেলকা, নিরঞ্জন,বেহুলার খাড়ি ইত্যাদি।
বগুড়া জেলার খনিজ সম্পদঃ উল্লেখযোগ্য কোন খনিজ সম্পদ নেই।
বগুড়া জেলার পত্র-পত্রিকাঃ দৈনিক করতোয়া, দৈনিক বগুড়া, দৈনিক চাঁদনিবাজার, দৈনিক উত্তরাঞ্চল, দৈনিক আজ ও আগামীকাল, দৈনিক সকালের আনন্দ ইত্যাদি।
বগুড়া জেলার নামকরণ
নাসির উদ্দিন বগড়া এর নামানুসারে এ আঞ্চলের নাম হয় বগড়া আর এ বগড়া থেকেই বগুড়া নামের উৎপত্তি। উল্লেখ্য যে দিল্লির শাসক গিয়াসউদ্দিন বলবনের পুত্র ছিলো নাসিরউদ্দিন বগড়া তিনি তার পিতার নির্দেশে বাংলায় আসেন।
বগুড়া জেলা ঐতিহ্য
- প্রাচীন বাংলার রাজধানী মহাস্থানগড়
- করতোয়া নদী
- বগুড়ার দই
- শেরপুরের ঐতিহাসিক খেড়ুয়া মসজিদ
- জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি
- এশিয়া মহাদেশে সর্ববৃহৎ নারী সংগঠন ও পরবর্তীতে এনজিও হিসেবে পরিচিত ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সাথ (টিএমএসএস) এর সদর দপ্তর
- গোকুল ইউনিয়নের ঐতিহাসিক বেহুলা-লক্ষীন্দরের বাসর ঘর প্রভৃতি।
বগুড়া জেলার দর্শনীয় স্থান
- ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ের প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষ
- সদর উপজেলার গোকুল গ্রামের বেহুলা লক্ষীন্দরের বাসরঘর (গোকুল মেধ)
- ভাসু বিহার
- ভিমের জঙ্গল
- শেরপুর উপজেলার খেরুয়া মসজিদ আদমদীঘির বাবা আদমের মাজার ও প্রখ্যাত দীঘি
- পাইকড় ইউনিয়নের ঐতিহাসিক যোগীর ভবনের মন্দির
- কাহালু উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের পাঁচপীর মাজার সারিয়াকান্দির পানি বন্দর
- শাহাজানপুরের বাবুর পুকুরের গণকবর
- খরনার পারতেপুর
- দুপচাচিয়ার জয়পীরের মাজার
- সান্তাহার সাইলো
- নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্রাম ইউনিয়নের দেওতা খা মাজার শরিফ
- বগুড়া শহরের ব্রিটিশ আমলের ‘নীলকুঠী’ বা ‘নওয়াব প্যালেস’
- শহীদ চালু আ জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম
- সরকারি আযিযুল হক কলেজ
- চাঁদমুহা হরিপুর-সাহার বিল এলাকার চাঁদ সওদাগরের বসতবাড়ি
- নামুজা ইউনিয়নের চিঙ্গাসপুরে পদ্মাদেবীর বাড়ি
- লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের রায় মাঝিড়ায় কালু গাজীর কোর্ট
- সাতমাথায় সার্কিট হাউজ সংলগ্ন নবাববাড়ি বা প্যালেস মিউজিয়াম ও কারাপরী
- ঐতিহাসিক আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ
- বগুড়ার উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরি ও লাইব্রেরি সংলগ্ন স্থানে বৃটেনের রাজ পরিবারের সদস্য এ্যাডওয়ার্ড সপ্তম জন এর প্রাচীন ভাস্কর্য
- সাতমাথায় অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠদের স্মৃতিস্তম্ভ
- উত্তরবঙ্গের সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক মানের চার তারকা হোটেল নাজ গার্ডেন
- শিশুদের চিত্তবিনোদনের স্থান ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক প্রভৃতি ।
বগুড়া জেলার পুরাকীর্তি
মহাস্থানগড়: এক সময় বাংলার রাজধানী ছিল মহাস্থানগড় বর্তমানে এটি বাংলাদেশের একটি আন্যতম পুরাকীর্তি নিদর্শন। প্রায় আড়াই হাজার বছর ধরে এই ধ্বংসাবশেষ কালের নিরব সাক্ষী হয়ে টিকে আছে। মহাস্থানগরে মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন সাম্রাজ্যের বহু নিদর্শন পাওয়া গেছে। এটি বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১০ কি.মি. উত্তরে শিবগঞ্জ উপজেলায়।
গোকুল মেধ (বেহুলার বাসর ঘর): বগুড়া সদর উপজেলার দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তের গোকুল গ্রামের এটি অবস্থিত। এটি বেহুলার বাসর ঘর নামে পরিচিত। ধারনা করা হয় খ্রিস্টাব্দ সপ্তম শতাব্দী থেকে ১২০০ শতাব্দীর মধ্যে এটি তৈরি করা হয়েছিল। এতে ত্রিকোণবিশিষ্ট ১৭২টি কক্ষ রয়েছে ইটের তৈরি এ স্তূপটি পূর্ব পশ্চিমে অপেক্ষাকৃত একটু দীর্ঘ।রাজা দেবপাল এ মনুমেন্টটি ৮০৯ থেকে ৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে নির্মান করেন। যদিও বর্তমান গবেষকদের মাঝে এ নিয়ে মতভেদ রয়েছে।
ভাসু বিহার: ১৯৭৩-৭৪ খ্রিস্টাব্দে নরপতির ধাপ নামে পরিচিত এ প্রত্নস্থলে উৎখনন শুরু করা হয় এবং এখান থেকে একটি মন্দিরের স্থাপতিক কাঠামো ও দুটি মধ্যম আকৃতির সংঘারাম সহ প্রচুর পরিমাণ প্রত্নবস্তু উম্মোচিত করা হয়। প্রায় ৮০০ প্রত্নবস্তুর মধ্যে পোড়ামাটির ফলক, ব্রোঞ্জের ক্ষুদ্রাকৃতির মূর্তি এবং পোড়ামাটির সীল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এখান থেকে পাওয়া গিয়েছে মূল্যবান পাথরের গুটিকা, মাটির গুটিকা, লোহার পেরেক, নকশাঙ্কিত ইট, মাটির প্রদীপ ও অন্যান্য দৈনন্দিন ব্যবহারের দ্রব্যাদি এবং প্রচুর মৃন্ময় পাথর টুকরা।
বগুড়া জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান: প্রেসিডেন্ট জিয়ায়র রহমান ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের ১৯ জানুয়ারি বগুড়া জেলার গাবতলি উপজেলাধীন বাগবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন ১নং সেক্টরের কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরউত্তম পদবীতে ভূষিত করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে ২১ এপ্রিল, ১৯৭৭ থেকে ৩০ মে, ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি ৩০ মে, ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আততায়ীদের হাতে নিহত হন।
এছাড়াও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা প্রফুল্ল চাকী, সাবেক কূটনীতিক ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী, ভাষা সৈনিক গাজিউল হক, লেখক ও সাংবাদিক এই আর আখতার মুকুল, জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, চলচ্চিত্র নির্মাতা আবু সাইদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত হাবিবুর রহমান (বুলু মিঞা), প্রজা আন্দোলনের নেতা রজিব উদ্দীন তরফদার পাকিস্তানের সাবেক মন্ত্রী ফজলুল বারী, সমাজসেবকদের মধ্যে তার হাবিবুর রহমান, আব্দুল বারী, থি এন. ওয়াজেদ হোসেন তরফদার, কবিরাজ শেখ আব্দুল আজির, এ.কে. মুজিবর রহমান, বেগম মাহমুদা সাদেক। চিকিৎসাবিদদের মধ্যে ডাঃ মহম্মাদ ইয়াছিন, তার ননী গোপাল দেবদাস, ভাঙার টি, আহম্মদ, ডাক্তার এস. আই. এম. গোলাম মান্নান। আইনবিদদের মধ্যে কলিম উদ্দীন আহম্মদ, খান বাহাদুর ইব্রাহিম, মজিবর রহমান, শিক্ষাবিদদের মধ্যে অধ্যক্ষ খোদেজা খাতুন, অধ্যাপক এ.কে.এম ইসলাম, অধ্যাপক এ.কে আজাদ, কবি ও সাহিত্যিকদের মধ্যে এম শমসের আলী, এম. শামদুল হক, তাজমিলুর রহমান, রোমেনা আফাজ সংস্কৃতিদের মধ্যে জ্ঞান আ সরকার, বেদার উদ্দীন আহম্মদ, আমান আরা বেগম, খুরশীদ (পাশা) প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
বগুড়া জেলার বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা
- আমজাদ হোসেন
- এল. কে. আবুল
- আব্দুল হাকিম
- মোঃ আঃ জোব্বার ফকির
- মোঃ রমজান আলী
- মোঃ হারুন-অর-রশিদ প্রমুখ।
বগুড়া জেলার উল্লেখযোগ্য মুক্তিযুদ্ধ
আদমদীঘি রেলওয়ে স্টেশনে যুক্ত কুসম্বীর যুদ্ধ, নসরতপুর রেলওয়ে স্টেশনে যুদ্ধ ,আদমদীঘি থানায় যুদ্ধ, , শহীদ সুজিত গেটে দুর্ঘটনা, ডালম্বা পাইক পাড়া যুদ্ধ,সান্ত হারের যুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের সময় বগুড়া ১১নং সেক্টরের অধীনে ছিল।
বগুড়া জেলা সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য
- বগুড়াকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বলা হয়।
- ভারতের রাজা ‘আশকা’ বাংলা জয় করার পর এর নাম রাখেন পুণ্ড্রবর্ধন। বগুড়া জেলা পুণ্ড্রবর্ধনের রাজধানী ছিল এবং সেসময় তা পুণ্ড্রনগর নামে পরিচিত ছিল। এটিই বর্তমানে মহাস্থানগড় নামে পরিচিত।
- জেলাটি খাদ্য শস্য ও শাকসবজি উৎপাদনের ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত। ⇒ কৃষি যন্ত্রাংশ ও ফাউন্ড্রি, সিরামিক, সাবান, কটনমিল প্রভৃতি জেলার উল্লেখযোগ্য শিল্প।
বগুড়া জেলার সংসদীয় আসন
বগুড়া জেলার সংসদীয় আসন- ৭টি।
বগুড়া-১,সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলা।
বগুড়স-২,শিবগঞ্জ উপজেলা।
বগুড়া-৩,আদমদীঘি দুপচাচিয়া উপজেলা ।
বগুড়া-৪কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলা ।
বগুড়া-৪,শেরপুর ধুনট উপজেলা।
বগুড়া-৬,বগুড়া সদর উপজেলা গাবতলি।
বগুড়া-৭,শাহাজানপুর উপজেলা।
######