ণ-ত্ব বিধান কাকে বলে? ণ-ত্ব বিধানের কয়েকটি নিয়ম উদাহরণসহ লিখ

ণ-ত্ব বিধানের কয়েকটি নিয়ম

ণ-ত্ব বিধান

উত্তর : তৎসম শব্দের বানানে- ‘ণ’ ব্যবহারের বিধান বা নিয়মকে ণ-ত্ব বিধান বলে। অর্থাৎ‍ যে নীতি বা নিয়ম অনুযাযী বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত তৎসম শব্দের বানানে ‘ণ’-এর ব্যবহার নিশ্চিত করা হয় তাকেই ণ-ত্ব বিধান বলা হয়।

উদাহরণসহ ণ-ত্ব বিধানের কয়েকটি নিয়ম নিম্নরূপ:

১। ঋ, র, ষ – এর পর ‘ণ’ হয়। একারণে ঋ-কার, র-ফলা, রেফ, এবং ক্ষ (ক+ষ) এর পরেও ‘ণ’ হয়। যেমন, ঋণ, রণ, ভাষণ,ভীষণ, তৃণা, ঘ্রাণ, বর্ণিল, বর্ষণ, ক্ষণ প্রভৃতি।

বিঃ দ্রঃ বিদেশি ও অতৎসম শব্দ এবং ক্রিয়াপদে এনিয়ম প্রযোজ্য নয়। যেমন: দরুন (পারসি), ঝরনা, ধরন (অতৎসম শব্দ); ধরেন, মারেন, করেন, পারেন (ক্রিয়াপদ) প্রভৃতি।

২। ঋ, র, ষ, এর পর যদি ক, খ, গ ঘ, ঙ বা প, ফ, ব, ভ, ম বা হ, য়, যং এই ১৪টি বর্ণের যে কোনোটি বসে তবে তারপরেও ‘ণ’ হয়। যেমন: কৃপণ, গৃহিণী, প্রমাণ, গ্রহণ, উৎক্ষেপণ প্রভৃতি।

আরও পড়ুন:

উদাহরণসহ ‘ব’ ফলা উচ্চারণের ৫টি নিয়ম

উদাহরণসহ ‘অ’ ধ্বনির সংবৃত উচ্চারণের ৫ টি নিয়ম

উদাহরণসহ ‘অ’ ধ্বনির বিবৃত উচ্চারণের ৫ টি নিয়ম

৩। ট বর্গের ট, ঠ ও ড-এর সঙ্গে যুক্ত হলে ‘ন’-না হয়ে ‘ণ’ হয়। যেমন: ঘণ্টা, বণ্টন, কণ্ঠ, লুণ্ঠন, ভণ্ড, গুণ্ডা প্রভৃতি।

বি: দ্র: ইংরেজি শব্দের nt এবং nd এর স্থলে বাংলায় ন্ট, এবং ন্ড হবে। কারণ বিদেশি শব্দে ‘ণ’ হয় না।

৪। প্র, পরি, নিঃ-এ তিনটি উপসর্গের পরে ‘ণ’ হয়। যেমন: প্রণয়, পরিণতি, পরিণয়, নির্ণয়, নির্ণীত প্রভৃতি।

বিঃ দ্রঃ এ নিয়মের ব্যতিক্রমও রয়েছে যেমন- প্রনষ্ট, পরিনষ্ট প্রভৃতি।

৫। ‘ত’ বর্গীয় ধ্বনির সঙ্গে যুক্ত হলে ‘ণ’ না হয়ে ‘ন’ হয়। যেমন: প্রান্ত, গ্রন্থ, ক্রন্দন প্রভৃতি ।

৬। কিছু শব্দে স্বভাবতই অর্থাৎ‍ কোনো নিয়ম ছাড়াই ‘ণ’ হয়। যেমন: বাণিজ্য, লবণ, মণ, বেণু, বীণা, কঙ্কণ প্রভৃতি।

 

আরও পড়ুন:

উপসর্গের অর্থবাচকতা নাই; কিন্তু অর্থ দ্যোতকতা আছে

ব্যাকরণ কাকে বলে? ব্যাকরণের কার্যাবলি আলোচনা কর

####

এই পোস্ট থেকে আমরা ণ-ত্ব বিধানের কয়েকটি নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারলাম। পোস্টটি কেমন লাগলো আমাদের কমেন্ট করে জানান। ধন্যবাদ।

Back to top button