কুষ্টিয়া জেলার সকল তথ্য (যে কোন পরিক্ষার জন্য)
কুষ্টিয়া জেলা পরিচিতি
কুষ্টিয়া জেলা পরিচিতি
কুষ্টিয়া জেলার পুরাতন নাম কিঃ নদীয়া।
কুষ্টিয়া জেলার কোন নদীর তীরে আবস্থিতঃ গড়াই ।
কুষ্টিয়া জেলা প্রতিষ্ঠা প্রতিষ্ঠিত হয় কবেঃ ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে।
কুষ্টিয়া মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয় কবেঃ ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে (নীল বিদ্রোহের কারণে)।
কুষ্টিয়া জেলার আয়তন কতঃ ১,৬২,১১৫ বর্গ কিলোমিটার।
কুষ্টিয়া জেলার সীমানাঃ উত্তর-পশ্চিম ও উত্তরে পদ্মা নদীর অপর তীরে রাজশাহী, নাটোর ও পাবনা জেলা, দক্ষিণে ঝিনাইদহ জেলা, পশ্চিমে মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলা এবং ভারতের নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলা এবং পূর্বে রাজবাড়ি জেলা।
কুষ্টিয়া জেলার ভৌগোলিক অবস্থানঃ ২৩°২৯′ হতে ২৪°১৩′ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°২৩′ হতে ৮৯°২২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ
কুষ্টিয়া জেলার বার্ষিক গড় তাপমাত্রাঃ সর্বোচ্চ ৩৭.৮° সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন ১১.২° সেলসিয়াস।
কুষ্টিয়া জেলার বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতঃ ১৪৬৭ মিলিমিটার ।
কুষ্টিয়া জেলায় উপজেলা কয়টি ও কি কিঃ ৬টি; কুষ্টিয়া সদর, কুমারখালী, খোকসা, মিরপুর, ভেড়ামারা ও দৌলতপুর ।
কুষ্টিয়া জেলার থানা কয়টি ও কি কিঃ ৭টি।
কুষ্টিয়া জেলায় পৌরসভা কয়টিঃ ৫টি; কুষ্টিয়া, কুমারখালী, ভেড়ামারা, মিরপুর ও খোকসা ।
কুষ্টিয়া জেলায় ইউনিয়ন কতটিঃ ৬৭টি।
কুষ্টিয়া জেলার পোস্ট কোড কতঃ ৭০০০।
কুষ্টিয়া জেলার এন ডব্লিউ ডি কোড কতঃ ০৭১।
ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া জেলার দূরত্ব কতঃ সড়ক পথে ২৭৭ কি. মি. ও রেলপথে ৪৭০ কি.মি. ।
কুষ্টিয়া জেলার জনসংখ্যা কতঃ ১৯,৪৬,৮৩৮ জন (২০১১ খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারী অনুযায়ী)।
কুষ্টিয়া জেলার জনসংখ্যার ঘনত্ব কতঃ ১,২০০ জন (প্রতি বর্গ কি.মি.)।
কুষ্টিয়া জেলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কতঃ ১.১১%
কুষ্টিয়া জেলার শিক্ষার হার কতঃ ৪৬.৩%
কুষ্টিয়া জেলার প্রধান ফসল কিঃ ধান, আখ, তামাক, পাট, গম, ভুট্টা, সরিষা, ডাল ইত্যাদি।
কুষ্টিয়া জেলার নদ-নদীঃ পদ্মা, গড়াই, কালীগঙ্গা, মাথাভাঙ্গা, কুমার, হিসনা ইত্যাদি।
কুষ্টিয়া জেলার খনিজ সম্পদ কি কিঃ উল্লেখযোগ্য কোন খনিজ সম্পদ নেই।
কুষ্টিয়া জেলার পত্র পত্রিকাঃ দৈনিক বাংলাদেশ বার্তা, দৈনিক দেশভূমি, দৈনিক শিকল, দৈনিক বজ্রপাত, দৈনিক আজকের আলো, দৈনিক দেশ তথ্য, দৈনিক হাওয়া, দৈনিক মাটির ডাক, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ রিভিউ, সাপ্তাহিক গড়াই, সাপ্তাহিক লালন ভূমি, সাপ্তাহিক কুষ্টিয়ার কণ্ঠ, সাপ্তাহিক দ্রোহ, মাসিক অভিষেক, মাসিক কৃষি কণ্ঠ ইত্যাদি ।
জেলা প্রশাসকঃ আপডেট জেনে নিবেন।
কুষ্টিয়া জেলার পটভূমি
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত এবং বাউল সম্রাট লালনের তীর্থভূমি কুষ্টিয়া ১৭২৫ খ্রিস্টাব্দে নাটোর জমিদারির অধীনে ছিল এবং এর পরিচিতি আসে কান্ডানগর পরগনার রাজশাহী ফৌজদারীর সিভিল প্রশাসনের অন্তর্ভুক্তিতে। পরে বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে কুষ্টিয়াকে যশোর জেলায় ও ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে পাবনা জেলায় অন্তর্ভুক্ত করে। ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে কুমারখালী ও খোকসা থানা নিয়ে কুষ্টিয়া মহকুমা নদীয়ার অন্তর্গত হয় ।
কুষ্টিয়া জেলার নামকরণ
কুষ্টিয়ার নামকরণ নিয়ে রয়েছে নানা কাহিনী। অনেকের মতে, কুষ্টিয়ায় একসময় কোষ্টার (পাট) চাষ হত বলে কোষ্টা শব্দ থেকে কুষ্টিয়া নামকরণ হয়েছে। হেমিলটনের গেজেটিয়ারে উল্লেখ আছে যে স্থানীয় জনগণ একে কুষ্টি বলে ডাকত বলে এর নাম হয়েছে কুষ্টিয়া। অনেকের মতে, ফরাসি শব্দ ‘কুশতহ’ যার অর্থ ‘ছাই দ্বীপ’ থেকে কুষ্টিয়ার নামকরণ হয়েছে। আবার, অনেকে মনে করেন, সম্রাট শাহজাহানের সময় কুষ্টি বন্দরকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়া শহরের উৎপত্তি ঘটেছে।
কুষ্টিয়া জেলার দর্শনীয় স্থান কোনগুলো:
- শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি
- ফকির লালন শাহের মাজার
- মীর মশাররফ হোসেনের বসত ভিটা
- পুরাতন কুষ্টিয়া হাটের হরিপুর গ্রামে গীতিকার ও কবি আজিজুর রহমানের বসতভিটা ও কবর প্রভৃতি ।
বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব
ফকির লালন শাহ: বাউল সম্রাট লালন শাহ এর জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে যথেষ্ট মতান্তর রয়েছে। তার জাতি ধর্ম বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায় না। প্রবাদ আছে যে তার জন্ম হিন্দু কায়স্থ পরিবারে। কোন এক সময় তিনি এক বাউল দলের সঙ্গী হয়ে গঙ্গাস্নানে যান। পথিমধ্যে বসন্ত রোগে আক্রান্ত হলে সঙ্গীরা তাকে নদীর তীরে ফেলে যান। সিরাজ শাহ নামক এক মুসলমান বাউল তাকে কুড়িয়ে সেবা করে সুস্থ করে তোলেন। সিরাজ শাহর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে তিনি মরমী সাধনায় আত্মনিয়োগ করেন। সিরাজ শাহর মৃত্যু হলে তিনি কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় আখড়া স্থাপন করে সেখানে তাঁর প্রতিভার বিকাশ ঘটান। তাঁর গান আধ্যাত্মিক, মরমী ও শিল্পগুণে সমৃদ্ধ। তাঁর রচিত গানের সংখ্যা সহস্রাধিক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সর্বপ্রথম লালনের ২৯৮টি গান সংগ্রহ করে ২০টি গান তৎকালীন ‘প্রবাসী’ প্রত্রিকায় প্রকাশ করেন। তাঁর খাচার ভিতর অচিন পাখি, বাড়ির পাশে আরশি নগর, মিলন হবে কত দিনে, আমার ঘরখানায় কে বিরাজ করে ইত্যাদি গান বাউলতত্ত্ব বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। ১২৯৭ বঙ্গাব্দের ১ কার্তিক ছেউড়িয়ায় তিনি দেহত্যাগ করেন।
মীর মশাররফ হোসেন : ‘গাজী মিয়া’ খ্যাত প্রথম বাঙালি মুসলিম নাট্যকার ও প্রথম মুসলিম উপন্যাস রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেন ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৩ নভেম্বর কুমারখালীর লাহিনী পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে তিনিই প্রথম একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন যার নাম ছিল ‘আজিজুননেহার’ (১৮৭৪-৭৬)। তার আরেকটি উল্লেখযোগ্য পত্রিকা ছিল ‘হিতকরী’। তাঁর অসংখ্য গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বিষাদসিন্ধু, জমিদার দর্পণ, উদাসীন পথিকের মনের কথা, গাজী মিয়ার বস্তানী, রত্নবতী, বসন্তকুমারী, গোজীবন, আমার জীবনী, সংগীত লহরী ইত্যাদি । তিনি ১৯ ডিসেম্বর, ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।
এছাড়াও রয়েছেন কুষ্টিয়ার সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠাতা কাঙাল হরিণাথ মজুমদার, শান্তি পুরের কবি মোজাম্মেল হক, নীল বিদ্রোহের নেত্রী প্যারী সুন্দরী, স্বদেশী আন্দোলনের নেতা বাঘা যতিন, বিশিষ্ট কবি দাদ আলী, কবি আজিজুর রহমান, লেখিকা মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা, ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ গানের রচয়িতা আবু জাফর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান, প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সঙ্গীত শিল্পী মোঃ আব্দুল জব্বার ও ফরিদা পারভীন, মোহিনী মোহন, রাধা বিনোদ পাল, আকবর হোসেন, ম্যনাথ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ ।
অন্যান্য:
⇒ তালবাড়িয়া খাল, মোসা খাল, জিয়া খাল, বৌদাঙ্গী খাল, বরিশাল খাল প্রভৃতি জেলার উল্লেখযোগ্য খাল ।
⇒ বামন্দী বিল, আড়ুয়া বিল, পুঁটিমারা বিল, মৌলার বিল, বোয়ালিয়া বিল, তালবাড়িয়া বিল, সমসপুর বিল, কাদিরপুর বিল, সোনাপাতিল বিল ইত্যাদি জেলার উল্লেখযোগ্য বিল।
⇒ কুষ্টিয়া জেলার জগতিতে ‘কুষ্টিয়া সুগার মিলস লিঃ’ নামে ১টি চিনিকল রয়েছে।
সংসদীয় আসন- ৪টি।
৭৫-কুষ্টিয়া-১,দৌলতপুর উপজেলা
৭৬-কুষ্টিয়া-২,মিরপুর ও ভেড়ামার
৭৭-কুষ্টিয়া-৩,কুষ্টিয়া সদর উপজেলা
৭৮-কুষ্টিয়া-৪,কুমারখালী খোকসা উপজেলা
৩০৮-সংরক্ষিত মহিলা আসন-৮, সংরক্ষিত মহিলা আসন